রমজানের প্রথম দশদিন রহমত , দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাত এবং তৃতীয় দশদিন জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি এই সম্পর্কে হাদিসটি ঠিক নয় , বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ

জাল জাল-হাদিস জাহান্নাম ভুল মিথ্যা শিরক হাদিস বিদআত হারাম নাজায়েজ জয়ীফ যয়ীফ দূর্বল গুনাহ পাপ হাদিসের নামে বা ধর্মের নামে মিথ্যা রমজান প্রথম দশদিন রহমত , দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাত এবং তৃতীয় দশদিন জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি
রমজানের প্রথম দশদিন রহমত , দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাত এবং তৃতীয় দশদিন জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি এই সম্পর্কে হাদিসটি ঠিক নয় , বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ

প্রথম দশদিন– রহমত , দ্বিতীয় দশদিন– মাগফিরাত এবং তৃতীয় দশদিন জাহান্নামের- আগুন থেকে মুক্তি ,সমাজে প্রচলিত এই হাদিস টি মুনকার : য‘ঈফ আত্ তারগীব ৫৮৯, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৮৮৭, শু‘আবূল ঈমান ৩৩৩৬।
কারণ এর সানাদে ‘আলী ইবনু যায়দ ইবনু জাদ্‘আন একজন দুর্বল রাবী।
আসুন এখন সহিহ হাদিসের আলোকে দেখি ।
এই ভাবে রমজানকে তিন ভাগে ভাগ করে – একেক ভাগে রহমত, মাগফিরাত আর জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির দু’আ করা- বিদআত। শরিয়তে এর কোন ভিত্তি নেই..
ইমাম মুসলিম (১০৭৯) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, “যখন রমজান মাস আসে তখন রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানগুলোকে শিকলাবদ্ধ করা হয়।”
এখান থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে গোটা রমজান মাস আল্লাহর পক্ষ থেকে এক রহমত। গোটা মাসেই মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে নাজাত হয়। রমজান মাসের বিশেষ কোন অংশ এ মর্যাদাগুলোর কোন একটির জন্য খাস নয়। এটি আল্লাহর বিপুল রহমতের নিদর্শন।
তিরমিযি (৬৮২) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, “রমজানের প্রথম রাত্রিতে শয়তান ও অবাধ্য জ্বিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়। জাহান্নামের কোন দরজা খোলা রাখা হয় না। জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। জান্নাতের কোন দরজা বন্ধ রাখা হয় না। একজন আহ্বানকারী আহ্বান করতে থাকে, হে কল্যাণ অন্বেষী আগোয়ান হও। ওহে, মন্দ অন্বেষী তফাৎ যাও। আল্লাহ প্রতি রাত্রিতে কিছু মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করে দেন।”[আলবানী সহিহ তিরমিযি গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
এর ভিত্তিতে বলা যায়: রমজানের প্রথম দশদিনে রহমতের দু’আ করা, মাঝের দশদিনে মাগফিরাতের দু’আ করা, শেষের দশদিনে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির জন্য দু’আ করা– বিদআত। শরিয়তে এর কোন ভিত্তি নেই। এ ধরনের বিশেষ দু’আর কোন অবকাশ নেই; যেহেতু এক্ষেত্রে রমজানের সকল দিন সমান। বরং একজন মুসলিম গোটা রমজান মাসব্যাপী দুনিয়া–আখেরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করে আল্লাহর দরবারে দু’আ করবে। এ প্রার্থনার মধ্যে রহমত, মাগফিরাত, জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের দু’আও থাকবে।
একজন মুসলিমের উচিত কল্যাণ ও বরকতের মৌসুমকে কাজে লাগিয়ে এ মাসে কল্যাণ ও রহমতের দু’আ করা। আল্লাহর রহমত ও তাঁর ক্ষমা প্রাপ্তির উদ্দেশ্য নিয়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি ঈমান আনা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬]

কোথায় যাচ্ছেন? আরো নতুন কিছু জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুনঃ   সমাজে প্রচলিত কিছু শিরক এর তালিকা জেনে নিই (পর্ব ৪)।
বিঃদ্রঃ যদি কেউ দাবি করেন বা সন্দেহ পোষণ করেন যে উপরে প্রদত্ত বক্তব্য গুলোর মধ্যে ভুল আছে বা যে কোন টা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে বা আরো বিস্তারিত জানা দরকার তাহলে কমেন্ট বক্সে বিস্তারিত জানান । 
MuslimPoint Organization

About MuslimPoint Organization

MuslimPoint একটি অনলাইন ভিত্তিক ইসলামী প্রশ্নোত্তর, গ্রন্থাগার, ব্লগিং, কুরআন, হাদিস, কুইজ এবং বিষয় ভিত্তিক রেফারেন্স প্ল্যাটফর্ম।

View all posts by MuslimPoint Organization →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *