হামাস কি শিয়া নাকি সুন্নী ? এরা কি ফিলিস্তিনের সুন্নী মুসলমানদের বন্ধু নাকি শত্রু ?
প্রথমে আসুন দেখি হামাস কি শিয়া নাকি সুন্নী:
প্রথমে আসুন কিছু প্রশ্ন নিয়ে আপনাকে চিন্তা করাই ,
১) জীবনে কখনো শুনেছেন / দেখেছেন যে শিয়ারা সুন্নীদের কোন উপকার করেছে ? শুনে বা দেখে থাকলে প্রমাণ দিন । তাহলে যদি ধরে নিই যে হামাস সুন্নী তাহলে কেনো ইরান তাদের এতো সাহায্য করে ?
২)কখনো কি শুনেছেন ইসরাইলি বিমান বাহিনী হামাসের অস্ত্র ভাণ্ডারে এট্যাক করে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে কিংবা ইসরাইলি বিমান হামলায় হামাসের দশ পনেরো যুদ্ধা নিহত হয়েছে ? অথচ ইসরাইল চাইলে তিন ঘন্টার মধ্যে হামাসের সব গুলি ঘাঁটি এবং অস্ত্র ভান্ডার ধ্বংস করে দিতে পারে।
জানি এর জবাব আপনার কাছে নেই। কেননা ইসরাইল শুধু মাত্র হামলা করে ঐ সমস্ত বেসামরিক সুন্নি মুসলমানদের বাড়ি ঘরে যারা সালাফি ও সৌদি আরব পন্থী কারণ এদের তালিকা হামাস ইসরাইলের কাছে পাঠায়। অন্য দিকে দেখুন হামাস গত তিন দিনে এক হাজার পঞ্চাশটির বেশী মিসাইল ছুড়েছে ইসরাইলের দিকে অথচ এর একটিও ইসরাইলের কোন স্থাপনায় আঘাত আনে নাই।
৩)একটু ভাবুনঃ এক হাজার মিসাইল অথচ নিহত মাত্র পাঁচজন।আর অন্য দিকে ফিলিস্তিনে গত কয়েক দিনে ইসরাইলি বিমান হামলায় মারা গেছে প্রায় ২০০ জন বেসামরিক লোক যার মধ্যে হামাসের কেউ নেই। আপনি কি ভিডিও গুলি দেখেন না হামাসের জিহাদিরা ইসরাইলি সৈন্যের মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে থুতু দেয় অথচ ইসরাইলি সৈনিক গুলি করেনা। হামাসের পাঁচ ছয়জন জিহাদি মাত্র পাথর দিয়ে ঢিল দিয়ে ইসরাইলি অস্ত্র ধারী সৈন্যদের সামনে দাঁড়িয়ে আক্রমণ করে কিন্তু ইসরাইলি বাহিনী গুলি করেনা।
কিন্তু সুন্নিদের দেখলেই গুলি করে দেয় এমনকি নারী শিশু হলেও… একটু চিন্তা ভাবনা করেন না কেন আসলে খেলাটা কি নিয়ে হচ্ছে ?
৪) কি কারনে তুরস্ক, ইরান এত কিছুর পরেও ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেনা ?
আপনি কি জানেন, ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে হামাস ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র(সেক্যুলার) গঠন করার অগ্রিম ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ?
আপনি কি জানেন, ইসরাইলি বিমান বাহিনীর একমাত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তুরস্কে অবস্থিত ?
আপনি কি জানেন ইসরাইল থেকেও বেশী ইহুদি বাস করে ইরানে ? ইসরাইল থেকে ইরানে প্রতিদিন অসংখ্য ফ্লাইট আসা যাওয়া করে ?
এসব তথ্য ছাড়াও আরো কিছু তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের গবেষণামতে হামাস হলো শিয়াপন্থী । বাকিটা আল্লাহু আলাম ।
এখন যুদ্ধ বিরতির পথে ইসরায়েল-হামাস । আসেন লাভ-লস/ক্ষতি হিসাব করিঃ
দুই শতাধিক নিহত ফিলিস্তিনি এবং শেইখ জার্রাহ বরাবর ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ধসিয়ে দিয়ে ইসরায়েলের রাস্তা পরিস্কার করে অবশেষে যুদ্ধ বিরতির পথে ইসরায়েল-হামাস!
১। শেইখ জার্রাহ বরাবর ইসরায়েল যে রাস্তা চেয়েছিলো তা কুক্ষিগত হলো ইসরায়েলের।
২। শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত।
৩। ইসরায়েলের যে পাচজন নিহতের খবর এসেছে তার মাঝে তিনজন আরব মুসলিম, একজন ভারতীয় হিন্দু, ও একজন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সদস্য (যদিও এর কোনো সত্যতা নাই)। মোদ্দাকথা ইহুদি কেউ নিহত হয়নি!
৪। ফিলিস্তিন ইস্যু বিক্রি করে এরদোগান আবারো হিরো!
৫। ফিলিস্তিন ইস্যু বিক্রি করে লেবাননের হিজবুশ শাইতান (হিজবুল্লাহ) আবারো হিরো!
৬। ফিলিস্তিন ইস্যু বিক্রি করে সিরিয়ার আসাদ রেজিম আবারো হিরো!
৭। ফিলিস্তিন ইস্যু বিক্রি করে ইসরায়েলের প্লান বি হামাস আবারো হিরো!
৮। ফিলিস্তিন ইস্যু বিক্রি করে ইরান আবারো হিরো!
৯। আহত ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনের নাগরিকদেরকে তাৎক্ষণিক মেডিকেল সাহায্য দেয়া থেকে শুরু করে নিজ দেশে নিয়ে এসে বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়ার পরও মিডিয়ার বদৌলতে মিশরের আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি ইহুদিদের দালাল ও ভিলেন!
১০। উত্তপ্ত ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রথম থেকেই আন্তর্জাতিক লবিং এর মাধ্যমে ও ওয়াইসির মাধ্যমে সৌদি আরব এই যুদ্ধ বিরতির জন্য ইসরায়েলকে বাধ্য করেছে,কিন্তু সৌদি আরবই এই ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি গালি খেয়েছে!
উপরে যা দেখলেন তার সবই লস!
হামাসকে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের চেয়েও বেশি ঘৃনা করতো, সেই ঘৃনা বেড়েছে অনেকাংশে। এবং চুক্ষুমানদের কাছে হামাস,শিয়া,ইখওয়ানিরা যে মুসলমানদের প্রধান শত্রু,তা আবারো প্রমানিত হলো!
এখন আসুন মূল প্রশ্নে , এখানে হামাস বা ইরানের লাভ কি ?
আমরা সবাই জানি যে মসজিদুল আকসা মুসলিমদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ । এখন শিয়ারা মনে করে যে তারাই একমাত্র সঠিক ও সত্য মুসলিম । তারা(অধিকাংশ ) সুন্নী মুসলিমদের কাফের মনে করে । যেহুতু শিয়ারা নিজেদের একমাত্র সত্য মুসলিম বা ফিরকায়ে নাজিয়াহ (মুক্তি প্রাপ্ত দল) মনে করে তাই তারা মসজিদুল আকসা নিজেরা দখল করতে চাই। এখন ইরান এর যে শক্তি আছে সেটা দিয়ে তারা চাইলে সহজে হয়তো ইসরাঈল এর সাথে যুদ্ধ করতে পারে (আল্লাহু আলাম) কিন্তু এখানে ২ টি সমস্যা আছে ।
১) যদি শুধুমাত্র এই ইস্যুতে ইসরাঈল এর সাথে তারা যুদ্ধ করে তবে বাইরের দেশগুলো তাদের সার্পোট করবে না এবং তাদের উপর একটা নেতিবাচক চাপ সৃষ্টি হবে ।
২) ধরে নিই যদি তারা ইসরাঈল এর সাথে যুদ্ধ করে ও জয়ী হয় তারপর ও তারা নিজেরা মসজিদুল আকসা দখল করতে পারবে নাহ । কারণ সেখানে সুন্নী মুসলিম আছে। আর শিয়া দের সাথে সুন্নীদের কখনো ঐক্য সম্ভব নয় তাদের নিকৃষ্ট আকিদার কারণে । তারা যদি সুন্নী মুসলিমদের তখন তাড়িয়ে/বের করে দিতে চাই তাহলে মুসলিম দেশ গুলো তখন ইরান(শিয়াদের) উপর চাপ সৃষ্টি করবে ।
এজন্য তারা ইসরাঈল এর সাথে হাত মিলিয়ে সুণ্ণী মুসলিমদের হত্যা করতে সাহায্য করে । কারণ সুন্নীরা যদি চলে যায় ফিলিস্থিন থেকে তখন তারা সহজে নিজেরা মসজিদুল আকসা দখল করতে পারবে ।
হামাস বা ইরান (শিয়া ) কিভাবে ইসরাঈল দের সাহায্য করে ?
প্রথমে একটা কথা মনে রাখবেন যে ইসরাঈল কখনো সরাসরি আক্রমন করতে চায় না । তারা আমাদের মতো এতো বোকা না । তারা দেখাতে চায় যে তাদের উপর প্রথমে আক্রমণ হয়েছে তাই তারা সেটা প্রতিরোধ করার জন্য পাল্টা আক্রমণ করেছে । এজন্য তারা হামাস কে কাজে লাগায় । হামাস প্রথমে ইসরাঈল এ আক্রমণ করে এরপর ইসরাঈল মিডিয়ার মাধ্যমে (যেহুতু মিডিয়া তাদের দখলে ) বাইরের দেশ কে দেখায় যে আমাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করা হচ্ছে তাই আমরা প্রতিরোধ করার জন্য পাল্টা আক্রমণ করছি আর তাদের আক্রমণে হাজার হাজার সুন্নী ফিলিস্থিনী নিহত হয় । আসলে এভাবে তারা কাজ গুলো করে । বাকিটা আল্লাহু আলাম ।
আরো একটু বিস্তারিত জানার জন্য এখানে ক্লিক করে Mokhles Bin Arshad এর বক্তব্যর প্রথম অংশটুকু শুনুন ।
আরো একটু বিস্তারিত জানার জন্য এখনে ক্লিক করুন । (Sheikh Saifuddin Belal Madani)