ফাজায়েলে বা ফাজায়েলে আমল বইয়ের মিথ্যাচার বা ভুল ভ্রান্তি

বই ভুল ভ্রান্তি মিথ্যা জাল যয়ীফ জয়ীফ দূর্বল বেহেস্তী জেওর হেদায়া কুদুরী এহিয়াও ঊলুমূদ্দিন মসনবী শরীফ নেয়ামুল কোরাণ দোয়ায় গঞ্জল আরশ খাবনামা ও ফালনামা তাজকিরাতুল আওলিয় ভেদে মারেফত ইয়াদে খোদা আশেকে মাশুক এস্কে এলাহী ফাজেয়েলে আমল গ্রন্থ সাবধান সতর্ক
ফাজায়েলে বা  ফাজায়েলে আমল বইয়ের মিথ্যাচার বা ভুল ভ্রান্তি

লেখা পড়ার আগে যদি ছবি সহ প্রমাণ দেখতে চান তাহলে এই লিংকে ক্লিক করুন ।

“আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) হুজুরেপাক (সাঃ) এর এরশাদ বর্ণনা করিয়াছেন যে , জিকিরে খফি যাহা ফেরেস্তারাও শুনিতে পায় না , তাহা সত্তর গুণ বর্ধিত হইয়া যায় । কেয়ামতের দিবস সমস্ত হিসাব নিকাশ যখন শেষ হইয়া যাইবে তখন আল্লাহ পাক বলিবেন , অমুক বান্দার কোন আমল বাঁকী রহিয়াছে কি ? তখন কেরামান কাতেবীন বলিবেন , আমাদের লিখিত সমস্ত আমলই আমরা পেশ করিয়াছি । তখন আল্লাহ তায়ালা বলিবেন , আমার নিকট তাহার এমন আমল রহিয়াছে যাহা তোমাদের জানা নাই । উহা হইল “জিকিরে খফি” অন্য রেওয়ায়েতে আছে , যেই জিকির ফেরেস্তাগণ শুনিতে পায় না উহা জিকিরে জলির উপর সত্তর গুণ বেশী ফজীলত রাখে” ।

কবি বলিলেন , অর্থাৎ “প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে এমন সব রহস্য রহিয়াছে যাহা ফেরেস্তাগণও জানিতে পারে না” (ফাজায়েলে আমাল , ফাজায়েলে জিকির অধ্যায় , ৩০৫পৃঃ)

লক্ষ্য করুন কবিতায় যে প্রেমিক-প্রেমিকার কথা বলা হয়েছে , তা আল্লাহর শানে ব্যবহৃত হইতে পারে না , কারন আল্লাহ পুরুষ নন এবং স্ত্রীও নন । তিনি প্রেমিক /প্রেমিকা হবেন কিভাবে ? আল্লাহর শানে স্ত্রী বা পুংলিঙ্গ সূচক শব্দ ব্যবহার কি অজ্ঞতা ও বাতিল আক্বীদার বহিঃপ্রকাশ নয় ? আল্লাহর সঙ্গে বান্দার মুহাব্বাত হতে পারে , কিন্তু ইশক হতে পারে না । কারন ইশকের মধ্যে পাগলামী আছে যা সৃষ্টি বা মাখলুকের সঙ্গে চলে । খালিক অর্থাৎ স্রষ্টার সাথে ইশক চলে না ।

অতঃপর আল্লাহ তায়ালা কিরামান কাতিবীন (সম্মানিত লেখকদ্বয়) সম্পর্কে কুরআন কারীমে বলেছেন :

“আর অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত রয়েছে । কিরামান কাতিবীন (সম্মানিত লেখকদ্বয়) ।‘তারা সব জানেন তোমরা যা করছো” । – সূরা ইনফিতার : ১০-১২ ।

আয়াতটি ভাল করে পড়ুন এবং বুঝুন । এখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যে , বান্দা যে সব ‘আমল করে কিরামান কাতিবীন ফেরেস্তাদ্বয় তা সবই জানেন । আর লিখক সনদবিহীন হাদীস আর কবিতা বর্ণনার ভিত্তিতে বলেছেন ‘জিকিরে খফি’ নাকি ফেরেস্তারা জানে না ।

সূরা কাহাফ আয়াত ৪৯-এ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :
“আর তারা বলবে , আফসোস (আমাদের জন্য দুর্ভগ্য) এটা কেমন আমলনামা এতে ছোট (খফি) বড় কোন গুনাহই লিপিবদ্ধ করা ব্যতীত ছেড়ে দেয়া হয়নি ? যা কিছু তারা করেছে , তার সব কিছুই তারা লিখিত আকারে উপস্থিত পাবে । আপনার রব , কারো উপর যুলুম করেন না (করবেন না )”

পড়ুন এবং বুঝুন – বান্দাগণ স্বীকার করবে যে , তাদের আমলনামা ছোট-বড় কিছুই বাদ পড়েনি , সবই তাতে আছে ।

আরও একটি আয়াত দেখুন । সূরা বনী-ইসরাঈল : ১৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন : পড় তোমার কিতাব (আমলনামা) । আজ তোমার হিসাব গ্রহণের জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট ।

এই আয়াতের বর্ণনামতে যদি একজন ব্যক্তি তার আমলনামার ভিত্তিতেই নিজের হিসাব করতে পারে যে সে জান্নাতী নাকি জাহান্নামী । তাহলে বলুন একজনের কিছু নেক আমল যদি আমলনামার বাহিরে থেকে যায় তাহলে সে কি তার হিসাব গ্রহণের জন্য যথেষ্ট হবে ?

এখন আপনারাই বলুন , আমরা প্রমাণবিহীন লেখকের কথা বিশ্বাস করবো নাকি , আল্লাহর বাণী কুরআনের কথা বিশ্বাস করবো ? এসব কথা লেখার আগে উল্লিখিত আয়াত গুলোর কথা একবারও কি লেখকের মন পড়েনি ? কিতাবখানি প্রকাশের পর তাবলীগী জামায়াতের কোন আমীরের নজরে কি তা পড়েনি ? তাহলে একমাত্র এই কিতাব তারা কেমন পড়া পড়েন ? নাকি গোঁড়ামীর কারণে তা সংশোধন করতে পারেননি ।

আমি তাদের অনেকের সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি । আমার কাছাকাছি থাকা তাবলীগের আমীর – চিল্লা লাগানো আলেমদের সাথেও । তারা সত্যের কাছে হার মানলেও কেউ সংশোধনে আসেনি । একজন তো বলে ফেললেন আমি হাদীস অস্বীকার কারী । আমি বললাম , আচ্ছা বুঝলাম আমি হাদীস অস্বীকারকারী । তাহলে আপনি কি ? পরস্পর বিপরীত দুটি জিনিসের প্রতি একসাথে বিশ্বাস রাখা যায় না । যেখানে কুরআন এবং হাদীস পরস্পর বিপরীত কথা বলছে সেখানে দুটিই একসাথে সত্য হতে পারে না । আর এক্ষেত্রে কোরআনকে কোন মুমিন-মুসলিম বাদ দিতে পারে না । আর যে হাদীস কুরআনের বিপরীত কথা বলে সেটা অবশ্যই অবশ্যই নবীর হাদীস নয় । যে কারণে লেখক নিজেও এর কোন রেফারেন্স দিতে পারেন নি । আল্লাহপাক আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন এবং সত্যকে গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন । আমীন!

লেখকের মতে শুধু জিকিরে খফিই আমলনামা থেকে বাদ পড়ে না বরং আরো বড় নেকীও বাদ পড়ে যায় । যেমন ফাজায়েলে দরুদ অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন – “কেয়ামতের দিবস কোন মুমিন বান্দার নেকী যখন কম হইয়া যাইবে তখন হুজুরে পাক (সাঃ) আঙ্গুলের মাথা বরাবর একটা কাগজের টুকরা মীজানের পাল্লায় রাখিয়া দিবেন যার দরুন তাহার নেকীর পাল্লা ভারী হইয়া যাইবে । সেই মুমিন বান্দা বলিয়া উঠিবে আপনি কে ? আপনার সুরত কতই না সুন্দর । তিনি বলিবেন আমি হইলাম তোমার নবী এবং ইহা হইল আমার উপর পড়া তোমার দরুদ শরীফ । তোমার প্রয়োজনের সময় আমি উহা আদায় করিয়া দিলাম । – ফাজায়েলে দরুদ : ৩৪পৃঃ ।

প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল আল্লাহর সাথে , আর এ ঘটনা ঘটেছে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে ।

আমরাতো জানি দরুদ সহ সকল ইবাদাতের সওয়াব আমলনামায় সংরক্ষিত থাকে । কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পঠিত দরুদ আমলনামায় পাওয়া গেল না তা পাওয়া গেল রাসূল (সাঃ) এর হাতে । এটা রাসূল (সাঃ) এর হাতে পৌঁছল কি করে ? আমলনামা তো ফেরেস্তা সংরক্ষন করেন , নবী-রাসূলরা নয় । লেখক এবং এর তালিমকারীরা (পাঠকারীরা) কি বলবেন ? এটাও কি জিকিরে খফি যা ফেরেস্তাদের কিতাব থেকে লিপিবদ্ধ হওয়া থেকে বাদ পড়ে গেল ? আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মুমিন হওয়ার পরও সে নবীকে চিনতে পারেনি । অথচ হাদীস থেকে জানা যায় মুমিনরা কবরেই সওয়াল-জওয়াবের সময় নবীকে চিনে ফেলবেন ।

আসুন আরো কিছু জেনে নেওয়া যাকঃ 

১) “ক্ষুধার্থ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহর আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরের পার্শ্বে গিয়ে খাদ্যের আবেদন করে ঘুমিয়ে পড়লেন। সেই অবস্থায় তার নিকট রুটি আসল, ঘুমন্ত অবস্থায় ঐ ব্যক্তি অর্ধেক রুটি খাওয়ার পর জাগ্রত হয়ে বাকী অর্ধেক রুটি খেলেন।” ফাযায়েলে হ্‌জ্জ, পৃ:১৫৫-১৫৬।

# হাদিস গ্রন্থ পড়েন, জীবিত রাসুল (সাঃ) স্বয়ং ক্ষুধার তাড়নায় কষ্ট পেয়েছেন। বহু সাহাবী ক্ষুধায় পেটে পাথর চাপা দিয়ে রাখতেন। উপরের ঘটনা যে পুরা হাদিস বিরোধী! জীবিত রাসুল (সাঃ) কাওকে রুটি দিতে পারলেন না , কবর থেকে তিনি কিনা রুটি দিলেন? রিজিকের মালিক আল্লাহ রুটি দেয়ার মালিক আল্লাহ; তারা আল্লাহর কাছে না চেয়ে চাইলো রাসুল (সাঃ) এর কাছে যিনি কিনা কবরে!

২) জনৈক মহিলা তিন জন খাদেম কর্তৃক মার খাওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরের পার্শ্বে গিয়ে বিচার প্রার্থনা করলে, আওয়াজ আসল ধৈর্য ধর, ফল পাবে। এর পরেই অত্যাচারী খাদেমগণ মারা গেল। ফাযায়েলে হজ্জ, পৃ: ১৫৯।

# সাহায্য চাইতে হবে আল্লাহর কাছে। অন্তত দুনিয়ায় জীবিত মানুষ যাদের সাহায্য করার ক্ষমতা আছে তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া যায়। কিন্তু কিতাবের ঘটনায় সাহায্য চাওয়া হলো কবরে রাসুল (সাঃ) এর কাছে। রাসুলের (সাঃ) কবর থেকে আওয়াজ আসলো?

৩) অর্থাভাবে বিপন্ন এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহর আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরের পার্শ্বে হাজির হয়ে সাহায্যের প্রার্থনা করায় তা কবুল হল। লোকটি ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে দেখতে পেল যে, তার হাতে অনেকগুলো দিরহাম। ফাযায়েলে হজ্জ, পৃ: ১৬২-৬৩।

# রাসুল (সাঃ) এর কাছে আবু বকর (রাঃ) তাঁর সমস্ত সম্পদ দান করে একেবারে নিস্বঃ হয়ে গিয়েছিলেন। কই জীবিত রাসুল (সাঃ) কি তাঁকে কিছু দিরহামের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন? জীবিত রাসুল (সাঃ) প্রাণপ্রিয় শশুর সাহাবীর জন্য পারলেন না কিন্তু ফাজায়েলে কিতাবের অর্থাভাবে বিপন্ন ব্যক্তির জন্য পারলেন। 

৪) মদীনার মসজিদে আযান দেয়া অবস্থায় এক খাদেম মুয়াজ্জেমকে প্রহার করায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহর আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরের পার্শ্বে গিয়ে বিচার প্রার্থনা করল। প্রার্থনার তিনদিন পরই ঐ খাদেম মরা গেল। ফাযায়েলে হ্‌জ্জ, পৃ:১৬২-৬৩।

৫) জনৈক অসুস্থ ব্যক্তি চিকিৎসায় ব্যর্থ হওয়ায় ঐ ব্যক্তির আত্মীয় (করডোভার এক মন্ত্রী) রোগ্যের আবেদন করে হুজুরের (সাল্লাল্লাহর আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কবরে পাঠ করার জন্য অসুস্থ ব্যক্তিকে পত্রসহ মদীনায় প্রেরণ করে। কবরের পার্শ্বে পত্র পাঠ করার পরেই রোগীর আরোগ্য লাভ হয়ে যায়। ফাযায়েলে হজ্জ, পৃ: ১৬৭।

৬) কোন ব্যক্তি হুজুরের রওজায় আরজ করায় রওজা হতে হুজুরের হস্ত মোবারক বের হয়ে আসলে উহা চুম্বন করে সে ধন্য হল। নব্বই হাজার লোক উহা দেখতে পেল। আবদুল কাদের জিলানীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ফাযায়েলে হজ্জ, পৃ:১৫৯।

এই কথা যেই লোক বলতে পারে তিনি যে কিভাবে মানুষের কাছে আলেম হন !!! আল্লাহু আকবার। ৯০ হাজার লোক নাকি দেখেছে! মদিনায় সেই সময় ৯০ হাজার লোক দেখেছে? আপনি মদিনায় গিয়ে একটু গবেষণা দেন তো। বা কোনো আত্মীয় মদিনায় থাকলে খোজ পাঠান তো আদৌ এই ঘটনা ঘটেছে কিনা।

কোথায় যাচ্ছেন? আরো নতুন কিছু জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুনঃ   প্রচলিত সিয়াম বা রোজার নিয়্যাত মিথ্যা বা ভুল , বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ
আসুন আরো কিছু জেনে নেওয়া যাকঃ

আপনি প্রতিবাদ করেন যে আমরা তাবলিগ জামায়াতে না গেলে জানতে পারব না। আপনি নিজে ফাজায়েলে কিতাবের উদ্ভট কথাগুলো জেনেছেন কি? ৪০ দিন শুধু কয়েক পারা একই কথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বললেই ইসলাম কমপ্লিট? ফাজায়েলে কিতাবের এই কথাগুলোর বিরোধিতা আপনি যদি করতে পারেন তাদের সামনে তারপরেও তাদের সাথে থেকেই চিল্লা দিতে পারেন আমাদের জানাবেন,

১। জনৈক বালক আগামী কাল মারা যাবে।
#সে কিভাবে জানলো আগামী কাল মারা যাবে?
২। জনৈক বুজুর্গ মরে যাবে বলে মরে গেল। গোসল দেওয়ার সময় সে কথা বলে উঠলো ।
# কিভাবে জানলো সে মারা যাবে? মৃত মানুষ কিভাবে কথা বলে?
৩। জনৈক বুজুর্গ দৈনিক এত এত বার কুরআন খতম দিতেন!
# অথচ হাদিসে এসেছে তিন দিনের কমে কুরআন শেষ না করতে। আর বুজুর্গ এক দিনেই কয়েকবার? এটা কি আদৌ সম্ভব?
৪। জনৈক বালক জানতে পারে তার মা দোজখে আছে তখন জনৈক বুজুর্গ তার জিকির ”গিফট” দিয়ে দিলে বালকের মা জান্নাত লাভ করে।
# বালক জানলো কিভাবে? একজনের জিকির অন্য জনকে ”গিফট” করা যায় কি? জিকিরের এই বানোয়াট কিচ্ছার কারণ কি?

ফাজায়েলে কিতাবের এই শিরক বিদাত গুলোর বিরোধিতা করা মানেই অসৎ কাজে বাধা দেয়া এবং সৎ কাজে সহযোগিতা করা।

আসুন আরো কিছু জেনে নেওয়া যাকঃ

ফাযায়েলে আমলের ভুল, মিথ্যাচার, বিদআত ও শিরক সমূহের পৃষ্ঠা নাম্বারঃ- কলেবর বড় হয়ে যাচ্ছে তাই শুধুমাত্র পৃষ্ঠা নাম্বার দেয়া হলঃ-

ফাযায়েলে আমল পৃষ্ঠা ১১৮, ১২৫-১২৬ ১৫৬, ১৫৮, ১৬১,
মিথ্যা বিদআতি শিরকী কিচ্ছা সমূহ
ফাযায়েলে জিকির ২৪৮, ২৪৯, ২৮৯, ফাযায়েলে নামাজ ৪৯, ৬১, ১০৭, ১০৮,
জাল হাদিসঃ-
ফাযায়েলে তাবলীগ ৩২, ১৩২, ফাযায়েলে জিকির ২৩৮, ২৫৬, ২৬৩, ফাযায়েলে রমজান ৪৪৮, ফাযায়েলে কোরআন ১৯৪,
কোরআন বিরোধী কথাঃ-
ফাযায়েলে নামাজ ৪৭, ১১০,ফাযায়েলে জিকির ২৬৩, ৩১০, ৬৪১,
শিরকঃ-
ফাযায়েলে কোরআন ১৩৭, ১৯৬ ফাযায়েলে নামাজ ৭৭, ৮২, ফাযায়েলে জিকির ২৫৩, ২৬৪, ৩১৮, ৩৮০

তারাই আপনাকে এসে নানা উপাধি দিয়ে বলবে যদিও আপনি ওগুলোর সাথে মোটেও জড়িত নন, আপনি তো শুধু তাদেরকে কুরআন হাদিসের আলোকে তাদের শিরক সম্পর্কে সচেতন করছিলেন মাত্র। কিন্তু তারা আপনার কুরআন হাদিসের কোনো কথাই মানবে আপনাকে গালি দিবেই।

ওই সকল শিরক এর বিষয়ে তারা একটা টু-শব্দ না করেও আপনাকে তারা বানাবে,
১। ”তুই আহলে হাদিস” যদিও আপনি আহলে হাদিস নন!
২। ”তুই ওহাবী” – অথচ ওয়াহাব আল্লাহর একটি নাম। তারা নামটি ব্যাঙ্গ করে বলবে যদি আপনি ওয়াহাবী কি কাকে বলে জানেন না।
৩। আমেরিকা ইহুদিদের দালাল বানাবে। যদিও আপনি তা নন।
৪। হাদিসকে ”হদস” বলে ব্যাঙ্গ করবে।
৫। তুই তুকারী করবে
৬। সর্ব শেষ গালি গালাজ করা শুরু করবে।
৭। আপনাকে দাওয়াত তো দুরে থাক পারলে চোখের দৃষ্টি দিয়েই যেন খেয়ে ফেলবে আপনাকে।

আসুন আরো কিছু জেনে নেওয়া যাকঃ

ফাজায়েল সাদাকাত, ২য় খণ্ড, ২৮০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
“আবু আলি রোদবারি (রঃ) বলেন, ঈদের দিন একজন ফকির আসিয়া আমাকে বলিল যে এখানে কি কোন পরিস্কার জায়গা যেখানে একজন ফকির মরিতে পারে? আমি ইহা বাজে কথা মনে করিয়া বলিলাম, ভিতরে এসে যেখানে এসে মর। সে ভিতরে আসিয়া ওযু করিয়া দুই রাকাত নামাজ পড়িল ও মারা গেল। আমি তাহার কাফন দাফনের ব্যবস্থা করার পরে দেখিবার জন্য কাফন হটাইয়া দেখিতেই সে চোখ খুলিয়া ফেলিল। আমি তাকে বলিলাম, মৃত্যুর পরেও জীবন? সে বলিল আমি জীবিত ও আল্লাহর প্রত্যেক আশেকই জীবিত থাকেন। আমি তোমায় কাল কিয়ামতে স্বীয় প্রতিপত্তিতে সাহায্য করিব”।
এখানে লক্ষণীয়-
১. ফকির আগে থেকেই তার মৃত্যুর খবর জেনে সে তার মৃত্যুর জায়গা নিজে নিজেই ঠিক করল।
২. সে মারা যাওয়ার পরেও একজন জীবিত মানুষ তাকে তাকে কিছু জিজ্ঞাস করল ও সে শুনল।
৩. কথা শুনার পর সে তার উত্তরও দিল।

এখন দেখা যাক কুরআন কি বলে-
১. আল্লাহ বলেন,
“… কেউ জানেনা আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানেনা কোন স্থানে সে মৃত্যুবরন করবে।” (সূরা লুকমানঃ ৩৪)
এই আয়াতের ব্যখায় নবী (সঃ) বলেন, “এগুলো গায়িবের কথা এবং এগুলো আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা।” (সহিহ বুখারি)
কুরআন আমাদের শিক্ষা দেয়, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা সে কোথায় মারা যাবে। আর তাবলীগরা শিক্ষা দেয় ফকির বুজুর্গরা জানতে পারে তারা কোথায় মারা যাবে !!!

২. আল্লাহ বলেন,
“মৃতকে তো তুমি (নবী) কথা শুনাতে পারবে না”।
(সূরা নামলঃ ৮৪)
তাহলে কিভাবে ঐ ব্যক্তি মৃত ফকিরকে প্রশ্ন করল এবং সে শুনল?

৩. আল্লাহ বলেছেন, “জীবিত ও মৃত কখনো সমান না”।
(সুরা আল ফাতিরঃ ২২)
অর্থাৎ, কিন্তু গল্পে জীবিত ও মৃত- উভয়েই কথা বলছে অর্থাৎ উভয়েই সমান।
হাদিসে আছে (প্রথম অংশ দেওয়া হল), “একদিন রাসুল (সঃ) ও একজন ইহুদী বসে ছিলেন। এমন সময় একটি জানাজা অতিক্রম করতে থাকলে সে জিজ্ঞাসা করে, “হে মুহম্মদ, এই লাশ কি কথা বলতে পারে?” রাসুল (সঃ) জবাব দেন, “এই বিষয়ে আল্লাহ অধিক অবগত।.।”
(আবু দাউদঃ ৩৬০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনুদিত)
শুধু একটি ঘটনা না, আরও অসংখ্য এমন আজগুবি অনেক কিচ্ছা রয়েছে তাবলীগি ভাইদের একমাত্র পঠিত বইগুলোতে।
এখন দেখতে পাচ্ছি-
১. তাবলীগ ও তাদের আমলের বই এক কথা বলছে।
২. কোরআন হাদিস তার ভিন্ন আর এক কথা বলছে।
যেহেতু দুটো বিপরীত কথা, তাহলে এখানে যেকেউ একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। যেহেতু, কোরআন ও রাসুল (সঃ) কখনো মিথ্যা বলতে পারেনা, সেহেতু যে গল্পটি বলেছে সে অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আর যে বইয়ে মিথ্যাবাদীদের দ্বারা তৈরি আজগুবি গল্প, কিচ্ছা কাহিনী দিয়ে ভরা সে বই অনুযায়ী আমল করতেই কি রাসুল (সঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন? বরং রাসুল বলেছেন,
“নেতা, উপনেতা বা দাম্ভিক ধোঁকাবাজ লোক ছাড়া আর কেউ কিচ্ছা কাহিনী বর্ণনা করেনা”। (আবু দাউদঃ ৩৬২৪)

শায়েখ আবুল খায়ের বলেন, একবার মদীনা মোনাওয়ারায় হাজির হইয়া পাঁচ দিন পর্যন্ত আমাকে উপবাস থাকতে হয়। খাওয়ার জন্য কিছুই না পেয়ে অবশেষে আমি হুজুর এবং শায়ইখানের কবরের মধ্যে সালাম পড়িয়া আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল। আমি আজ রাতে আপনার মেহমান হবো। এই কথা আরজ করে মিম্বর শরীফের নিকট গিয়ে আমি শুইয়া পড়লাম। স্বপ্নে দেখি, হুজুরে পাক (সাঃ) তাশরীফ এনেছেন। ডানে হযরত আবু বকর, বাম দিকে হজরত ওমর এবং সামনে হজরত আলী রাঃ। হযরত আলী রাঃ আমাকে ডেকে বলেন, এই দেখ, হুজুর সাঃ তাশরীফ এনেছেন। আমি উঠা মাত্রই মহানবী সাঃ আমাকে একটা রুটি দিলেন, আমি অর্ধেক খেয়ে ফেলি। তারপর যখন আমার চোখ খুলিল তখন আমার হাতে বাকী অর্ধেক ছিল (রুটি অবশিষ্টাংশ)।
সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৬ পৃষ্ঠা।
সম্মানিত মুসলিম ভাইগণ!
=> আল্লাহকে ছেড়ে মৃতু্র পর নবীর মাজারে গিয়ে খাদ্যের প্রার্থনা করা স্পষ্ট শিরক নয় কি?
=> মৃতুর পর নবী কবরে থেকেও খাওয়াতে পারেন এ আক্বিদাহ পোষন করা শিরক নয় কি?
=> এই রকম শিরকী আকিদাহ কি মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়, নাকি জাহান্নামের দিকে?
অথচ মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেন,
ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর। (সূরা হুদ-৬)
এখান থেকেই সূফীদের শিরকি আক্বিদাহ
“””কেউ ফেরে না খালি হাতে, খাজা বাবার দরবার হতে”” টাইপের গান শুরু হইছে। নবীর রওজায় যদি গিয়ে রুটি পাওয়া যায়। তবে ওলী আউলিয়ার মাজারে কেন চুইংগাম পাওয়া যাবে না। এই কাহিনী নিশ্চিত নিশ্চিত ভাবে মানুষকে শিরক ও মাজার মুখি করার শিক্ষা দেয়।

বিখ্যাত সূফী (?) ও বুজুর্গ হজরত শায়খ আহমদ রেফয়ী (রঃ) ৫৫৫ হিজরী সনে হজ্জ সমাপন করিয়া নবীজির রওজা জিয়ারতের জন্য মদিনায় হাজির হন। সেখানে তিনি নিম্নোক্ত রওজার সামনে দাঁড়াইয়া নিম্নোক্ত দুটি বয়াত পড়েন।
“দূরে থাকা অবস্থায় আমি আমার রুহকে হুজুর সাঃ এর খেদমতে পাঠাইয়া দিতাম। সে (রুহ) আমার নায়েব হইয়া আস্তানা শরীফে চুম্বন করিত। আজ আমি শ্বশরীরে দরবারে হাজির হইয়াছি। কাজেই হুজুর আপন হস্ত বাড়াইয়া দেন যেন আমির ঠোট উহাকে চুম্বন করিয়া তৃপ্তি হাসিল করে। বয়াত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে (??) কবর হইতে হাত মোবারক বাহির হইয়া আসে এবং হযরত রেফায়ী উহাকে চুম্বন করিয়া তৃপ্তি হাসিল করেন।
বলা হয় যে, সে সময় মসজিদে নববীতে ৯০ হাজার লোকের সমাগম ছিল। সকলেই বিদু্তের মতো হাত মোবারকের চমক দেখিতে পায়। তাহাদের মধ্যে মাহবুবে ছোবহানী আব্দুল কাদের জিলানীও ছিলেন। সূত্র: ফাজায়েলে হজ্জ-২৫৮ পৃষ্ঠা ২৩তম নবী প্রেমের কাহিনী।
ওহে তাবলীগ প্রেমী আল্লাহর বান্দারা, চিন্তা কর। জ্ঞান খাটাও। আমার কথায় না, আল্লাহর কথায় যা সূরা যুমার এর ১৮ নং আয়াত এ। আজও মসজিদে নববীতে ৯০ হাজার লোক ধারণ করে না। আর ৯০ হাজার লোক যদি থেকেই থাকে তাহলে কিভাবে ৯০ হাজার মানুষ এট এ টাইম এই হাতের ঝলকানি দেখতে পায়?
=> এই ফালতু মার্কা কাহিনীই কি তোমরা বিশ্বাস কর?
=> এই সব জিনিসেরই কি তোমরা তাবলীগ করো?
নবীজি সাঃ কখনো আবু বকর(রাঃ) ওমর(রাঃ), ওসমান(রাঃ), আলী (রাঃ) এর জন্য হাত বাড়ালেন না। কখনো নবী পরবর্তী এত যুদ্ধ হাঙ্গামার সময় হাত বাড়ালেন না। আর কোন জায়গার কোন রেফায়ীর জন্য কবর থেকে হাত বাড়ান। এই সব গাজাখুরী কাহিনীই কি তোমাদের তাবলীগের বিষয়?
=>আর ৯০ হাজার মানুষের কথা বইলা মানুষের মাথায় এই কাহিনীটাকে সত্য হিসেবে স্থান দিতে চেষ্টা করা হইছে যে ৯০ হাজার লোক যেখানে হাত দেখতে সেটা ভূল হইতে পারে না।
=> এবং আব্দুল কাদের জিলানী রহঃ এর নাম দিয়া কাহিনীটারে আরো পাকাপোক্ত করা হইছে।
=> আবার দেখেন রুহকে ইমেইলের মতো সেন্ড করে, প্রতিবারই নবীজি সাঃ কবর থেকে চুমা দেন।
এই সব কাহিনী একমাত্র সূফীদেরই হয়ে থাকে যেমন দেওয়ানবাগীর ১৯৯৮ সালের সম্মেলনে নাকি স্বয়ং আল্লাহ ও রাসূল সাঃ দেওয়ান শরীফে এসেছেন। নাউজুবিল্লাহ।
বুখারীর প্রথমে দিকের সহীহ হাদিস> যে নবীর নামে মিথ্যারোপ করে সে জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।
এই হাদিস অনুযায়ী যারা নবীর নামে মিথ্যারোপ করে, তাবলীগে গিয়ে গাজাখুরি মিথ্যা বানোয়াট কাহিনী শুনে এসে প্রচার করে,
আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই তারা কি জাহান্নামে তাদের ঠিকানা বানিয়ে নিচ্ছে না?

জনৈক বেদুঈন হুজুর (ছঃ) এর কবর শরীফের নিকট দাড়াইয়া আরজ করিল,
হে রব! তুমি গোলাম আজাদ করার হুকুম করেছো। ইনি (নবী সাঃ) তোমার মাহবুব, আমি তোমার গোলাম। আপন মাহবুবের কবরের উপর আমি গোলামকে (জাহান্নামের) আগুন হইতে আজাদ করিয়া দাও। গায়েব হইতে আওয়াজ আসিল, তুমি একা নিজের জন্য কেন আজাদী (ক্ষমা) চাহিলে? সমস্ত মানুষের জন্য কেন আজাদী চাহিলে না। আমি তোমাকে আগুন হইতে আজাদ করিয়া দিলাম। (সূত্র: ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৪ পৃষ্টার ১ম কাহিনী)
সম্মানিত জ্ঞানী মুসলিম ভাইগণ, রাসুলের মৃতু্র পর তার মাজারে গিয়ে প্রার্থনা করা মাজারপূজারীদের সাদৃশ্য নয় কি?
গায়েবী আওয়াজ শুনা তো নবুওয়াতের কাজ। ঐ বেদুঈন কি নবী ছিল যে গায়েবী আওয়াজ এলো ” আমি তোমাদের আগুন থেকে আজাদ করিয়া দিলাম”।
ভাবতে অবাক লাগে শাইখুল হাদিসের মত একজন স্বনামধন্য আলিম এ জাতীয় ইসলাম বিরোধী আক্বিদাহ বিশ্বাস কিভাবে ছড়াতে চেয়েছেন তাবলীগী নিসাবের মাধ্যমে।
কোরআন থেকে আমরা জানতে পারি আল্লাহ শুধু মাত্র মুসা আঃ এর সাথে দুনিয়ায় জীবনে কথা বলতেন। এবং অন্য আয়াতে আছে মানুষের এমন কোন যোগ্যতা নাই যে সে আল্লাহর সাথে কথা বলবে। কিন্তু তাবলীগি নিসাব পড়লে বুঝা যায় আল্লাহ গায়েবীভাবে মানুষের সাথেও কথা বলেন।
আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি না আল্লাহ নবীর পরে আমাদের সাথে কথা বলবেন। এই আক্বিদাহ একমাত্র দেওয়ানবাগী, সুরেশ্বরী, চরমোনাই এর পীরগণ ও সূফীবাদিরাই রাখতে পারেন। কারণ তাদের হজ্জ করা লাগে না। কাবা এবং স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুল তাদের বাসায় আসেন। নাউজুবিল্লাহ।
এই সব পীরপন্থী গ্রন্থ ও পীরদের ইসলাম আর নবী মোহাম্মদ সাঃ এর ইসলাম কখনোই এক নয়, কখনো ছিলও না।

শায়েখ ইব্রাহিম এবনে শায়বান (রঃ) বলেন, আমি হজ্বের পর মদিনা পাকে পৌছাইয়া কবর শরীফে হাজির হইয়া হুজুর পাক সাঃ এর খেদমতে ছালাম আরজ করিলাম। উত্তরে হুজরা শরীফ হইতে ওয়ালাইকুমুস্সালাম শুনিতে পাই।
সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্ব-পৃষ্ঠা-২৫৫ (৫ নং কাহিনী)
ও আল্লাহর বান্দারা চিন্তা কর, নবীজি সাঃ কবর থেকেও সালামের উত্তর দেন। এই সব আক্বিদার তাবলীগ করতে কে তোমাদের নির্দেশ দিছে? এই কাহিনী দিয়া এটাই বুঝাইতে চায় যে ইব্রাহিম এবনে শায়বান আল্লাহর অলী ছিল। তাকে তোমরা পাওনি। তিনি পরকালে চলে গেছেন। অতএব এখন তোমাদের সামনে যারা আছে অর্থ্যাত পীরগণ তাহাদের খেদমত কর। তাদের পুজা কর, সিজদা কর, ইবাদাতের না, সম্মানের সিজদাহ।
কত বড় গাজাখুরী কাহিনীতে ভরা এই ফাজায়েলে হজ্জ্ব। কলমের কালি শেষ হইয়া যাইবো ফাজায়েলে আমলের কাহিনী কাটা শুরু করলে।

আল্লামা কাস্তালানী (রঃ) বলেন, আমি একবার এমন কঠিন রোগে আক্রান্ত হই যে, ডাক্তারগণ পর্যন্ত নিরাশ হইয়া যায়। অবশেষে আমি মক্কা শরীফ অবস্থানকালে হুজুর সাঃ এর উছিলায় দোয়া করিলাম। রাত্রি বেলায় আমি স্বপ্নে দেখি, এক ব্যক্তির হাতে একটি কাগজের টুকরা, তাহাতে লেখা রহিয়াছে, ইহা আহমাদ বিন কাস্তালানীর জন্য ওষুধ। হুজুরে পাক (সাঃ) এর তরফ থেকে তাহার নির্দেশে (?) ইহা দান করা হইয়াছে। আমি ঘুম হইতে জাগ্রত হইয়া দেখি আমার মধ্যে রোগের কোন চিহ্ন নাই।
সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৫ পৃষ্ঠা (৬ নং কাহিনী)
হে আমার বিরোধীতাকারীরা, এ জাতীয় আক্বীদা বা বিশ্বাস যা শায়খ তুলে ধরেছেন এবং ছড়িয়ে দিয়েছেন মসজিদে মসজিদে তা কি কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী না।
অনেকে আমাকে বলছে, দেখান কই আছে কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোন কিছূ। আমি তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে চাই, কোরআন ও হাদিসের শিক্ষা হলো মানুষ অসুস্থ হলে আরোগ্যের জন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে।
=> নবীগণও অসুস্থ হলে আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতেন। কোন নবী অসুস্থ হলে অন্য নবীর ওয়াসীলায় অথবা মাজারে গিয়ে প্রার্থনা করেছেন মর্মে কোন দলিল পাওয়া যায় না।
=> মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম আঃ অসুস্থ হলে কি করেছিলেন আল্লাহ তায়ালা তা কুরআনে বর্ণনা করেন।
আমি যখন অসুস্থ হয়ে পড়ি, তখন আল্লাহই আমাকে আরোগ্য দান করেন। (আশ শুয়ারা-৮০)
আইয়ুব আঃ অসুস্থ হয়ে প্রার্থনা করেনঃ
“আর স্মরণ কর আইয়ুবের কথা যখন সে তার প্রতিপালকের আহ্বান করে বলেছিল, আমি দুঃখ কষ্টে পড়েছি, আর আপনি দয়াবানদের চেয়েও সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াবাদ। (সূরা আল আম্বিয়া-৮৩)
=> আল্লাহ তাদের আরোগ্যতা দান করেছিলেন। আর এই কাহিনী বলে নবীজির নির্দেশে এই ওষুধ। তাহলে আল্লাহ কই?
বিশ্বনবী সাঃ যখন কোন অসুস্থ লোককে দেখতে যেতেন তখন এই দুয়া পাঠ করতেনঃ
“হে মানবমন্ডলীর প্রতিপালক! এই রোগ দূর করে দিন, আরোগ্য দান করুন। একমাত্র আপনিই আরোগ্য দানকারী। আপনার শিফা ব্যতিত আর কোন শিফা নেই। আপনার শিফা এমন যে কোন রোগকে ছাড়ে না। (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম মিশকাত হাঃ ১৫৩০, মুসলিমের দোয়া পৃঃ১৩৪)
ও আল্লাহর বান্দারা, সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা, শায়খ জাকারিয়া তাবলীগি নিসাবের মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিমকে তাওহীদ বিরোধী এক ভয়ানক শিরকী আক্বীদার তালীম দিতে চেয়েছেন।
মৃত্যর পরও নবী সাঃ ডাক্তারী করেন, রোগী আরোগ্য করেন, স্বপ্নযোগে ফি ছাড়া ওষুধ পাঠান, এমন আক্বিদাহ কি মুসলিমরা রাখতে পারে?
হে মুসলিম জাতি, গোড়ামি ছেড়ে বিবেক খাটান। এই সব বিষয়ই কি তোমরা তাবলীগ কর। আমি শুনেছি, সারা বিশ্বে কোরআন এর পর যেটা সবচেয়ে বেশী পড়া হয় তা এই ফাজায়েলে আমল। এই কি ফাজায়েলে আমলের শিক্ষা? এজন্যই তো শাহজালাল শাহপরান, আজমীর শরীফে মানুষদের ভিড় হয়, কবরু পুজা, মাজার পুজা করে।
আল্লাহর কাছে আরোগ্যতা না চেয়ে মানুষ,ব্যক্তি, কবর, মাজার এর কাছে গিয়ে আরোগ্যতা চাওয়া কি শিরক না?
এইটা যদি শিরক হয়, তবে এটা কি জান্নাত হারাম করে দেয় না?

ইউসুফ বিন আলী বলেন, জনৈক হাশেমী মেয়েলোক মাদীনায় বাস করিত। তাহার কয়েকজন খাদেম তাহাকে বড় কষ্ট দিত । সে হুজুরের দরবারে ফরিয়াদ লইয়া হাজির হইল (বিচার চাইতে হাজির)। রওজা শরীফ হইতে আওয়াজ আসিল, তোমার মধ্যে কি আমার আদর্শের প্রতি আনুগত্যের আগ্রহ নাই। তুমি ছবর কর যেমন আমি ছবর করিয়াছিলাম। মেয়েলোকটি বলেন, এই সান্তনাবাণী শুনিয়া আমার যাবতীয় দুঃখ মুছিয়া গেল। ঐদিকে বদ আখলাক খাদেমগুলো মরিয়া গেল।
————————————————–(ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৯ পৃ)
সম্মানিত মুসলিম ভাইয়েরা! উল্লেখিত ঘটনাদ্বয় পড়ুন আর একটু ভেবে দেখুন, নাবী সাঃ ক্ববরে থেকেও মানুষের মুসিবত দূর করেন এবং বেয়াদবীর কারণে মানুষ মেরেও ফেলেন। জীবদ্দশায় নবী সাঃ কাফিরদের বিরুদ্ধে লড়াই করলেন, দাঁত শহীদ হল, মাথায় হেলমেট ঢুকে গেল। তখনতো নবী সাঃ এভাবে কাফিরদের মেরে ফেলতে পারতেন। কিন্তু তাতো করলেন না। কিন্তু মরার পরে এ জাতীয় ক্ষমতায় বিশ্বাস তো মাজার ভক্তরা করে থাকে। যা বিবেকেরও পরিপন্থী। মৃতুর পর যে লোকটারে চারজনে ধরে কবরে রাখতে হল, অতঃপর ক্ববরে রেখে মাটি চাপা দিলে তার সমস্ত শক্তি এসে যায়। যার সাধারণ জ্ঞান আছে সেও কি এ জাতীয় বিশ্বাস করতে পারে?
=> সাহাবারা কখনো কবর থেকে বিপদের ফায়সালা পেল না, আর সাধারণ খাদেম রা গিয়ে বিপদের কথা বললেই শুধু গায়েবী আওয়াজ আসে। এই ধরণের আক্বিদাহ একমাত্র সূফীবাদীদেরই হয়ে থাকে। এমদাদউল্ল্যাহ মক্কী, রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী সহ উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ মোটামুটি সবাই ছিলেন সূফীবাদী। তাই তাদেরও দোষ দেওয়া যায় না। কারণ সূফীরা মিথ্যা বলে না, মিথ্যা অটোমেটিক তাদের মুখ দিয়ে বের হয়।
মাত্র একটা উত্তর দেন, বিপদ থেকে উদ্ধারকারী নবী সাঃ না আল্লাহ?
সূরা ফাতিহা-৪ নং আয়াতে আমরা বলি, আমরা তোমারই ইবাদাত করি, তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।
কিন্তু এখানে কবরবাসীর নিকট সাহায্য চাওয়া হচ্ছে। অদৃশ্য বা গায়েবের নিকট কিছু চাইতে হলে সেটা একমাত্র আল্লাহর নিকটই চাইতে হবে। হ্যা এমনে পৃথিবীতে আমরা মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে পারি। কিন্তু “””গায়েবী ভাবে সাহায্য””” একমাত্র আল্লাহর নিকটই চাইতে হবে। আরো পড়ুন সূরা বাকারাহ-১৬০, আনআম-১৭-১৮, আরাফ-৩৭, ১২৮, ১৯৭।
=> আল্লাহকে বাদ দিয়ে নবীকে বিপদ থেকে রক্ষাকারী, গায়েবী সাহায্যকারী হিসেবে নির্ধারণ করা কি শিরক? নাকি সওয়াব?

বিশ্ব বরেণ্য আলিমগণের দৃষ্টিতে তাবলীগ জামা’আত ও তার নিসাব :
আল্লাহ পাক শারী’আতের বিভিন্ন বিষয়ে এ সমস্ত আলিমদের অভিমত গ্রহণ করার জন্য আল কোরআনে বলেন,
“তোমরা জ্ঞানবানদের জিজ্ঞেসা কর, যদি তোমরা তা না জান ।” (সূরা আম্বিয়া, ৭)
০১। শাইখ মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম আল শাইখ (রহঃ)- সাবেক গ্রান্ড মুফতী, সৌদী আরব তাঁর রাজকীয় তথ্য মন্ত্রনালয়ের প্রধানকে লেখা পত্রে তাবলীগ জামা’আত সম্পর্কে বলেন,
আমি মহোদয়ের নিকট এ প্রতিবেদন পেশ করছি যে, এই জামা’আতের কোনই ফায়দা নেই, এটি একটি বিদ’আতী এবং গোমরা সংগঠন । তাদের নিসাব গ্রন্থ পড়ে দেখলাম, তাতে গোমরাহী এবং বিদ’আত ভরপুর । এতে কবর পূঁজা এবং শিরকের দিকে আহ্বান করা হয়েছে । বিষয়টি এমনই যে, এ ব্যাপারে চুপ থাকা যায় না । এজন্য অবশ্যই আল্লাহ চাহেন তো আমি এর প্রতিবাদ লিপি পাঠাব যেন এর বিভ্রান্তি ও বাতিল প্রকাশ হয়ে পড়ে । আল্লাহর নিকট দু’আ করি তিনি যেন, তাঁর দ্বীনকে সাহায্য করেন এবং কালিমাকে সুউচ্চে রাখেন- আমীন ! তারিখঃ ২৯/০১/১৩৮২ হিঃ (তথ্য সূত্রঃ ফতওয়া ও চিঠিপত্র, শাইখ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলে শাইখ, খন্ড ১ পৃঃ ২৬৭-২৬৮)

কোথায় যাচ্ছেন? আরো নতুন কিছু জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুনঃ   ভেদে মারেফত বা ইয়াদে খোদা বইয়ের মিথ্যাচার বা ভুল ভ্রান্তি

০২। শাইখ আবদুল আযীয বিন বায (রহঃ) ‘র নিকট তাবলীগ জামা’আত এর সঙ্গে চিল্লায় বের হওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন,
“আল্লাহর নামে শুরু করছি এবং সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য । অতঃপর তাবলীগ জামা’আতের নিকট আক্বীদাহর ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ধারণা নেই । সুতরাং তাদের সাথে বের হওয়া উচিত নয় । একমাত্র যার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’তের আক্বীদা সম্পর্কে জ্ঞান ও স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে সে বের হতে পারে, এজন্য যে তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দিতে এবং প্রয়োজনীয় নাসীহাত করতে পারে এবং তাদেরকে কল্যাণমূলক কাজে সহায়তা করতে পারে । কেননা, তারা তাদের কাজের ব্যাপারে খুবই তৎপর । কিন্তু তারা আরো অধিক জ্ঞানের মুখাপেক্ষী এবং আলিম-উলাময়ে কিরামের প্রতি মুখাপেক্ষী, যারা তাদেরকে তাওহীদ ও সুন্নাহর জ্ঞানে আলোকিত করবে । আল্লাহ তা’আলা সকলকে দ্বীনের জ্ঞান দান করুন এবং এর উপর সাবেত রাখুন ।আমীন! (মাযমু ফাতাওয়া আল শাইখ ইবন বায, ৮/৩৩১)

০৩। শাইখ সালিহ আল ফাওযান বলেন,
আল্লাহর জন্যে বের হওয়া বলতে তারা যে ধরণের বের হওয়াকে বুঝে থাকে আসলে তা নয় । আল্লাহর জন্যে বের হওয়া বা আল্লাহর রাস্তা বলতে বোঝায় জিহাদের জন্যে বের হওয়াকে । তারা বের হওয়ার জন্যে যেভাবে আহবান করে থাকে তা একটি বিদ’আত যা সালাফদের থেকে বর্ণিত নেই, অর্থাৎ সালাফদের কেউ এভাবে বের হওয়ার জন্যে আহবান করেন নি ।
আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকার জন্যে বের হওয়াকে কয়েকটি দিনের মাঝে সীমাবদ্ধ করা যায় না, বরং একজন মানুষ তার সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে লোকদের আল্লাহর দিকে আহবান করবে, তার এই সামর্থ্যকে সে কোন নির্দিষ্ট কিছু দিন যেমন চল্লিশ দিন বা এর কিছু বেশি বা কম অথবা কোন দলের মাঝে সীমাবদ্ধ করবে না ।
অনুরূপভাবে, একজন দায়ীর অবশ্যই ইলম থাকতে হবে । একজন লোকের অনুমতি নেই সে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করবে অথচ যে একজন অজ্ঞ মূর্খ বা জাহেল ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, “(হে নবী,এদের) তুমি বলে দাও, এ হচ্ছে আমার পথ; আমি মানুষদের আল্লাহর দিকে আহবান করি; আমি ও আমার অনুসারীরা পূর্ণাংগ সচেতনতার সাথেই আহবান জানাই; আল্লাহ তায়ালা মহান, পবিত্র এবং আমি কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই” । [সূরা ইউসুফ ১০৮]
দ্রষ্টব্য; “সচেতনতার সাথেই আহবান জানাই”, এ আহবান হতে হবে ইলমের সাথে কারণ একজন আহবানকারী যেদিকে লোকদেরকে আহবান করছে তা সম্পর্কে তাকে অবশ্যই জানতে হবে । তাকে জানতে হবে কোনটি ফরয, মুস্তাহাব, হারাম আর কোনটি মাকরুহ । তাকে জানতে হবে শিরক সম্পর্কে; পাপকার্য, কুফর, অনৈতিকতা, অবাধ্যতা সম্পর্কে । অন্যায়ের এবং মন্দ কাজের কিভাবে মোকাবিলা করতে হয় সে সম্পর্কেও তাকে অবশ্যই জানতে হবে ।
এ ধরণের বের হওয়া (চল্লিশ দিন কিংবা চার মাস) মানুষকে ইলম অর্জন থেকে বিঘ্নিত করে এবং এটি একটি ভুল, কারণ ইলম অর্জন করা একটি অত্যাবশ্যক বা ফরয কাজ, আর এটা কেবলমাত্র শিক্ষার মাধ্যমেই অর্জন করা যায়, অনুপ্রেরণার মাধ্যমে নয় । এটা হল এক প্রকার ভুল পথে চালিত সুফী মিথ (myth), কেননা ইলম ছাড়া আমল হল ভুল পথে চলা বা পথভ্রষ্টতা আর শিক্ষা অর্জনের প্রক্রিয়া ছাড়া ইলম অর্জনের আশা করা একটি বিভ্রম ব্যতীত আর কিছু নয় ।
– সালাস মিহাদারাত ফিল-ইলম ওয়াল দাওয়াহ থেকে । আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন । শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ ।

কোথায় যাচ্ছেন? আরো নতুন কিছু জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুনঃ   তাফসিরে মারেফুল কুরআন মিথ্যাচার বা ভুল ভ্রান্তি

০৪। শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ)’র নিকট প্রশ্ন করা হয়ঃ
তাবলীগ জামা’আত সম্পর্কে আপনার অভিমত কি ? এদের সাথে কোন তালিমে ‘ইলম বা অন্য কেউ আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে বের হতে পারে কি ?
উত্তরে তিনি বলেন, তাবলীগ জামা’আত আল্লাহর কুরআন এবং রসূলের হাদীসের তরীকার উপর প্রতিষ্ঠিত নয় এবং আমাদের সলফে সালিহীনদের পন্থার উপর নয় । অবস্থা যখন এই, তখন তাদের সাথে বের হওয়া জায়িয হবে না । কেননা এটা আমাদের সালফে সালিহীনদের তাবলীগের পন্থার পরিপন্থী । দা’ওয়াতের কাজে বের হবেন আলিম বা বিদ্বান ব্যক্তি । আর এরা যারা বের হচ্ছে তাদের উপর অবশ্য করণীয় হল নিজের দেশে জ্ঞান শিক্ষা করা, মাসজিদে মাসজিদে জ্ঞানার্জনের ব্যবস্থা করা, যারা দা’ওয়াতের কাজ করবে তারা যেন আলিম তৈরী হয় । এ অবস্থায় তালিবে ইলমদের উচিত যেন এদেরকে তাদের দেশেই কুরআন-হাদীস শিক্ষার জন্য আহ্বান জানায় । মানুষকে আল্লাহর পথে দা’ওয়াত তাবলীগীরা কুরআন ও সুন্নাহকে তাদের মূলনীতি হিসাবে গণ্য করে না । বরং তারা এই দা’ওয়াতকে বিভক্ত করে ফেলেছে । এরা যদিও মুখে বলে যে, তাদের দা’ওয়াত কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক তা নিছক মুখের কথা, এদের কোন একক আক্বীদা বিশ্বাস নেই যা তাদেরকে একত্রিত করতে পারে । এজন্যই দেখা যায়- এরা হল সূফী ও মাতুরিদী, আশায়িরীর আর এরা তো কোন মাযহাবেই নেই । আর এর কারণ হল তাদের আক্বীদাহ-বিশ্বাস জটপাকানো । এদের নিকট স্বচ্ছ জ্ঞানের অভাব । এদের জামা’আত প্রতিষ্ঠার প্রায় অর্ধশত বছর পার হয়ে গেল কিন্তু এত লম্বা সময়ের পরও তাদের মাঝে কোন আলিম তৈরী হলো না । আমরা এজন্যই বলি আগে জ্ঞানার্জন কর, তারপর একত্রিত হও, যেন একত্রিত হওয়া যায় নির্দিষ্ট ভিত্তির উপর, যাতে কোন মতভেদ থাকবে না ।
তাবলী জামা’আত বর্তমান সূফী মতবাদের ধারক বাহক জামা’আত । এরা চরিত্র সংশোধনের ডাক দেয় কিন্তু আক্বীদা-বিশ্বাসের সংস্কার ও সংশোধনের ডাক দেয় না । এ ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ নিশ্চূপ । কেননা তাদের ধারণা মতে এর দ্বারা বিভক্তি সৃষ্টি হবে । জনাব সা’দ আল হুসাইন এবং ভারত-পাকিস্তানের তাবলীগের মুরব্বীদের সাথে বেশ কিছু পত্র যোগাযোগ হয় । এর দ্বারা এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তারা ওয়াসীলা, উদ্ধারকারী (ইস্তিগাসা) এবং এ ধরনের অনেক ধারণাই সমর্থন করে । প্রত্যেক তাবলীগীকে এই চার তরীকার ভিত্তিতে বাই’আত গ্রহণ করতে হবে । কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে এদের প্রচেষ্টায় অনেক মানুষই আল্লাহর পথে ফিরে এসেছে । বরং এদের সাথে বের হবার জন্য কেউ কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদের কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করার জন্য কি এটা যথেষ্ট নয় ? এ ব্যাপারে বলছি যে, এটার আমরা অনেক শুনেছি এবং জানি, সূফীদের কাছে থেকে অনেক ঘটনাই জানি । উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যদি শাইখের আক্বীদাহ ফাসিদ হয়, হাদীস জানে না বরং লোকজনের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে এতদ্বসত্ত্বেও অনেক ফাসিক লোক তার হাতে তাওবাহ করে । যে দলই ভাল বা কল্যাণের দিকে ডাকবে অবশ্যই তার অনুসারী পাওয়া যাবে । কিন্তু আমরা দৃষ্টি দিবো যে, সে কিসের দিকে আহ্বান করছে ? সে কি কুরআন হাদীস এবং সালফে সালিহীনের আক্বীদার দিকে ডাকছে এবং কোন মাযহাবের ব্যাপারে কোন রকম গোঁড়ামী করে না এবং যেখানেই পায় সুন্নাতের অনুসরণ করে । তাবলীগ জামা’আতের কোন ইলমী তরীকা বা পন্থা নেই । তাদের পন্থা হল স্থানের পরিপ্রেক্ষিতে যেখানে তার জন্ম হয়েছে । এরা সব রঙেই রঙ্গীন হয় । (ইমারতী ফতওয়া, আলবানী, পৃঃ ৩৮)

 

MuslimPoint Organization

About MuslimPoint Organization

MuslimPoint একটি অনলাইন ভিত্তিক ইসলামী প্রশ্নোত্তর, গ্রন্থাগার, ব্লগিং, কুরআন, হাদিস, কুইজ এবং বিষয় ভিত্তিক রেফারেন্স প্ল্যাটফর্ম।

View all posts by MuslimPoint Organization →

7 Comments on “ফাজায়েলে বা ফাজায়েলে আমল বইয়ের মিথ্যাচার বা ভুল ভ্রান্তি”

  1. মিঃ বুজের গু
    আপনার স্বল্প শিক্ষায় এসব বিষয় বুঝা সম্ভব নয়। তাই এত বড় দুঃসাহস না করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
    তবে যাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় নেই তাদের জন্য সত্য কে মিথ্যা আর মিথ্যা কে সত্য বানানো কোন বিষয় নয়।
    যদি সত্যিই ইলমের জোর থাকে তবে প্রকাশ্যে বড় বড় আলেমদের সাথে বসুন
    চোরের মতো মিডিয়ার দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ
    ছেলেপেলেদের মাথা নষ্ট করবেন না।

  2. তাবলীগ একটি সুফিবাদী দল। আল্লাহ যাদের ক্বলব, শ্রবণশক্তি, এবং দৃষ্টিশক্তি লুপ্ত করে তার উপর পর্দা ঢাকা দিয়েছেন। তারা ফিরবে না।

  3. ভাই রে সময় থাকতে ভালো হয়ে জান
    ,👹 এতো বোঝে তো আলেম দের সাথে বসেন না কেন।

  4. আসসালামু আলাইকুম ভাই। পুরোটা পড়ার ধৈর্য হয়নি তাই দু:খিত। তবে শুরুর দিকে কিছুটা পড়েছি। আপনি ফাজায়েলে হজ্ব থেকে বেশ কিছু রেফারেন্স দিলেন তবে আমি ওইসব পৃষ্ঠাগুলিতে এমন কোনো বর্ণনাই পাইনি। এবং কিছু রেফারেন্স ২৫৫+ পেইজ থেকেও দিয়েছেন। আমার ঘরে যে বইটা আছে তার পৃষ্ঠা সংখ্যা ২১৬! আপনি কোন ফাজায়েলে হজ্ব থেকে রেফারেন্স দিলেন যদি একটু বলতেন।

    1. আসল বইয়ের সাথে অনুবাদ করা বইয়ে পৃষ্ঠা নাম্বারের মিল পাওয়া যায় না। আপনার বই কি মূল ফাজায়েলে আমল নাকি অনুবাদ?

  5. আপনার দেওয়া রেফারেন্স তো মিল নেই ফাজায়ে আমলের বইয়ে এই লেখা গুলো তো খুজে পেলাম না

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *