রাসুল (সা.) গায়েব বা অদৃশ্যের খবর জানতেন না , ব্যাখ্যা ও দলিল বা রেফারেন্স সহ

সহিহ আকিদা বিশ্বাস
রাসুল (সা.) গায়েব বা অদৃশ্যের খবর জানতেন না , ব্যাখ্যা ও দলিল বা রেফারেন্স সহ
একমাত্র গায়েবের মালিক আল্লাহ। এ জন্য আল্লাহ পাক নবী (সাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন :
## বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে। ( সূরা নম্‌ল ২৭ – আয়াত ৬৫ )
## বলুন, আমার পালনকর্তা সত্য দ্বীন অবতরণ করেছেন। তিনি আলেমুল গায়ব। ( সূরা সাবা ৩৪ – আয়াত ৪৮ )
 
 মহানবী (সাঃ) গায়েব জানতেন না বলে : 
>>> ওহুদ যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আহত হন এবং মুসলিমদেরকে সাময়িক পরাজয় বরণ করতে হয়। [ তাফসীরে যাকারিয়া ]
>>> আয়েশা (রাঃ) এর চরিত্রে যখন কলঙ্ক দেওয়া হয়, তখন পূর্ণ একমাস নবী (সাঃ) অত্যন্ত অস্থিরতা ও পেরেশানী ভোগ করেন। [ বুখারী – ৪১৪১ ]
>>> একজন ইয়াহুদী মহিলা তাঁকে দাওয়াত দিয়ে খাবারে বিষ মিশিয়ে দেয়, যা তিনি ও সাহাবাগণও খেয়ে ফেলেন। এমন কি ঐ বিষাক্ত খাবার খেয়ে একজন সাহাবীর মৃত্যুও ঘটে। আর খোদ নবী (সাঃ) জীবনভোর বিষের প্রতিক্রিয়া ভোগ করেন। [ আ.দাউদ – ৪৫১২ ]
 
 নবী (সাঃ) গায়েব জানতেন না তাই তিনি তার ভাল – মন্দ বুজতে পারতেন না। এই কথা সমর্থনে আল্লাহ পাক নবী (সাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন :
## আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য। ( সূরা আরাফ ৭ – আয়াত ১৮৮ )
 
 হয়তো আপনি এখন বলবেন, নবী (সাঃ) যদি গায়েব না জানতেন তাহলে এই ঘটনাগুলো ঘটলো কিভাবে! :
>>> নবী (সাঃ) এমন দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যে কবর দু’টির বাসিন্দাদের উপর আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন তিনি বললেনঃ এদের দুজনকে আযাব দেয়া হচ্ছে অথচ তাদের এমন গুনাহর জন্য আযাব দেয়া হচ্ছে না (যা হতে বিরত থাকা) দুরূহ ছিল। তাদের একজন পেশাবের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করত না, আর অপরজন চোগলখুরী / পরনিন্দা করে বেড়াত। [ বুখারী – ১৩৬১ ]
>>> নবী (সাঃ) এর মৃত্যু সময় ফাতেমা (রাঃ) কে বললেন এই রোগে মৃত্যু হবে তাই শুনে তিনি কাদলেন। নবী (সাঃ) বললেন, তাঁর পরিজনের মধ্যে সর্বপ্রথম ফাতেমা (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিলিত হব, তখন তিনি হাসলেন। [ বুখারী – ৪৪৩৩ ]
 
আপনার কথার জবাব, আল্লাহ  গায়েবের খবর ফেরেস্তা কর্তৃক ওহীর মাধ্যমে জানাতেন। আল্লাহ নবী (সাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন :
## এটি গায়বের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরন করছি। ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না। আপনি ধৈর্য্যধারণ করুন। যারা ভয় করে চলে, তাদের পরিণাম ভাল, সন্দেহ নেই। ( সূরা হুদ ১১ – আয়াত ৪৯ ) 
## আপনি বলুন, আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিন : অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? ( সূরা আনআম ৬ – আয়াত ৫০ )
এবং আল্লাহ পাক মক্কাবাসীদের উদ্দেশ্য করে বলেন –
## তোমাদের সঙ্গী [ মুহাম্মাদ ] পাগল নয়। সে সেই বাণী বাহক [ জিবরাঈল আঃ ] কে সুস্পষ্ট দিগন্তে দেখেছে,
সে গায়বের [ বাণী বাহক থেকে প্রাপ্ত অদৃশ্যের জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার ] ব্যাপারে কৃপণতা করে না। ( সূরা তাকভীর ৮১ – আয়াত ২২-২৪ / অনুরুপ : সূরা নাজম ৫৩ – আয়াত ১-১০ )
 
এতো দলিল দেয়ার পরও যদি বুঝতে কষ্ট হয়, তাহলে বলব আপনার শায়েখ বা পীর নিশ্চই আয়েশা (রাঃ) এর চাইতে বড় আলিম বা জ্ঞানী নন। দেখুনতো, আয়েশা (রাঃ) গায়েব সম্পর্কে কি বলেন !:
## আয়িশা (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি বলে মুহাম্মাদ (সাঃ) স্বীয় রবকে দেখেছেন, সে মিথ্যা বলল। কেননা আল্লাহ্ বলেছেন, চক্ষু তাঁকে দেখতে পায় না। আর যে ব্যক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ (সাঃ) গায়েব জানেন, সেও মিথ্যা বলল। কেননা আল্লাহ্ বলেন, গায়িব জানেন একমাত্র আল্লাহ্। [ বুখারী – ৭৩৮০ ; আ.প্র.৬৮৬৪ ; ই.ফা.৬৮৬৬ ]
 
 অতএব এই আলোচনা থেকে বুঝা যায় গায়েবের মালিক বা গায়েব জানেন একমাত্র আল্লাহ পাক ( সূরা নমল ৭ – আয়াত ৬৫ / বুখারী – ৭৩৮০ )। নবী (সাঃ) গায়েব জানতেন না ( সূরা আনআম ৬ – আয়াত ৫০ / বুখারী ৭৩৮০ )। তবে আল্লাহ পাক ওহীর মাধ্যমে গায়েব জানাতেন ( সূরা আনআম ৬ – আয়াত ৫০ / সূরা ইমরান ৪ – আয়াত ১৭৯ )। নবী (সাঃ) গায়েব জানতেন এই আকিদা পোষণকারী আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করলো, শীরক হল বড় যুলম ( সুরা লুকমান ৩১ – আয়াত ১৩ ) আর শিরক কারী হলো চিরস্থায়ী জাহান্নামি ( সূরা মায়িদা ৫ – আয়াত ৭২ )( সূরা নিসা ৪ – আয়াত ১১৬ )। আল্লাহ পাক আমাদের সহীহ বুঝ দান করুক। আমিন।
 
পবিত্র কুরআন শুধুমাত্র আল্লাহকেই গায়েব বিষয়ে জানার সাক্ষ্য দেয়ঃ
 
(1) আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব। ( Hud: 31)
ﺎَﻟَﻭ ُﻝﻮُﻗَﺃ ﻱِﺪﻨِﻋ ْﻢُﻜَﻟ ُﻦِﺋﺍَﺰَﺧ ﺎَﻟَﻭ ِﻪَّﻠﻟﺍ ُﻢَﻠْﻋَﺃ َﺐْﻴَﻐْﻟﺍﺎَﻟَﻭ ُﻝﻮُﻗَﺃ ﻲِّﻧِﺇ ﺎَﻟَﻭ ٌﻚَﻠَﻣ َﻦﻳِﺬَّﻠِﻟ ُﻝﻮُﻗَﺃ ﻱِﺭَﺩْﺰَﺗُﻢُﻬَﻴِﺗْﺆُﻳ ﻦَﻟ ْﻢُﻜُﻨُﻴْﻋَﺃ ُﻪَّﻠﻟﺍ ۖ ﺍًﺮْﻴَﺧ ُﻪَّﻠﻟﺍ ﺎَﻤِﺑ ُﻢَﻠْﻋَﺃ ﻲِﻓۖ ْﻢِﻬِﺴُﻔﻧَﺃ ﺍًﺫِﺇ ﻲِّﻧِﺇ َﻦِﻤَّﻟ َﻦﻴِﻤِﻟﺎَّﻈﻟﺍ ١١﴿ ﴾٣١ :
 
(2) বস্তুতঃ তারা বলে, তাঁর কাছে তাঁর পরওয়ারদেগার এর পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ এল না কেন? বলে দাও গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন । আমি ও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম । ( Yunus: 20)
َﻥﻮُﻟﻮُﻘَﻳَﻭ ﺎَﻟْﻮَﻟ َﻝِﺰﻧُﺃ ٌﺔَﻳﺁ ِﻪْﻴَﻠَﻋ ﻦِّﻣ ْﻞُﻘَﻓ ۖ ِﻪِّﺑَّﺭ ﺎَﻤَّﻧِﺇِﻪَّﻠِﻟ ُﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ﺍﻭُﺮِﻈَﺘﻧﺎَﻓ ﻲِّﻧِﺇ ﻢُﻜَﻌَﻣ َﻦﻳِﺮِﻈَﺘﻨُﻤْﻟﺍ َﻦِّﻣ ﴿١٠ ٢٠ : ﴾
 
(3) আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য। ( Al-A’raaf: 188)
ﻞُﻗ ﺎَّﻟ ﻲِﺴْﻔَﻨِﻟ ُﻚِﻠْﻣَﺃ ﺎًﻌْﻔَﻧ ﺎَﻟَﻭ ﺍًّﺮَﺿ ﺎَّﻟِﺇ ﺎَﻣ َﺀﺎَﺷ ۚ ُﻪَّﻠﻟﺍْﻮَﻟَﻭ ُﺖﻨُﻛ ُﻢَﻠْﻋَﺃ َﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ُﺕْﺮَﺜْﻜَﺘْﺳﺎَﻟ َﻦِﻣ ِﺮْﻴَﺨْﻟﺍ ﺎَﻣَﻭَﻲِﻨَّﺴَﻣ ۚ ُﺀﻮُّﺴﻟﺍ ْﻥِﺇ ﺎَﻧَﺃ ﺎَّﻟِﺇ ٌﺮﻳِﺬَﻧ ٍﻡْﻮَﻘِّﻟ ٌﺮﻴِﺸَﺑَﻭَﻥﻮُﻨِﻣْﺆُﻳ : ٧﴿ ﴾١٨٨
 
(4) বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে। ( An-Naml: 65)
ﻞُﻗ ُﻢَﻠْﻌَﻳ ﺎَّﻟ ﻦَﻣ ﻲِﻓ ِﺕﺍَﻭﺎَﻤَّﺴﻟﺍ ِﺽْﺭَﺄْﻟﺍَﻭ َﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ﺎَّﻟِﺇۚ ُﻪَّﻠﻟﺍ َﻥﻭُﺮُﻌْﺸَﻳ ﺎَﻣَﻭ َﻥﺎَّﻳَﺃ َﻥﻮُﺜَﻌْﺒُﻳ ٢٧﴿ ﴾٦٥ :
 
(5) এটি গায়বের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরণ  করছি। ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না। আপনি ধৈর্য্যধারণ করুন। যারা ভয় করে চলে, তাদের পরিণাম ভাল, সন্দেহ নেই। (Hud: 49)
ْﻦِﻣ َﻚْﻠِﺗ ِﺀﺎَﺒﻧَﺃ ِﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ﺎَﻬﻴِﺣﻮُﻧ َﻚْﻴَﻟِﺇ ۖ ﺎَﻣ َﺖﻨُﻛﺎَﻬُﻤَﻠْﻌَﺗ َﺖﻧَﺃ ﺎَﻟَﻭ ﻦِﻣ َﻚُﻣْﻮَﻗ ِﻞْﺒَﻗ ﺍَﺬَٰﻫ ْﺮِﺒْﺻﺎَﻓ ۖ ۖ َّﻥِﺇَﻦﻴِﻘَّﺘُﻤْﻠِﻟ َﺔَﺒِﻗﺎَﻌْﻟﺍ ١١﴿ ﴾٤٩ :
 
(6) না তাদের কাছে গায়বের খবর আছে? অতঃপর তারা  তা লিপিবদ্ধ করে। ( Al-Qalam: 47)
ُﻢُﻫَﺪﻨِﻋ ْﻡَﺃ ْﻢُﻬَﻓ ُﺐْﻴَﻐْﻟﺍ َﻥﻮُﺒُﺘْﻜَﻳ ٦٨﴿ ﴾٤٧ :
(7) বলুন, আমার পালনকর্তা সত্য দ্বীন অবতরণ  করেছেন। তিনি আলেমুল গায়ব। ( Saba: 48)
ْﻞُﻗ َّﻥِﺇ ﻲِّﺑَﺭ ُﻑِﺬْﻘَﻳ ِّﻖَﺤْﻟﺎِﺑ ُﻡﺎَّﻠَﻋ ِﺏﻮُﻴُﻐْﻟﺍ ٣٤﴿ ﴾٤٨ :
(8) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না। ( Sura Jinn)
ِﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ُﻢِﻟﺎَﻋ ﺎَﻠَﻓ ُﺮِﻬْﻈُﻳ ٰﻰَﻠَﻋ ِﻪِﺒْﻴَﻏ ﺍًﺪَﺣَﺃ ‏[ : ٢٦ ٢٧
 
(9) তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত
হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে। (Al-An’aam: 59)
ُﻩَﺪﻨِﻋَﻭ ُﺢِﺗﺎَﻔَﻣ ِﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ﺎَﻬُﻤَﻠْﻌَﻳ ﺎَﻟ ﺎَّﻟِﺇ َۚﻮُﻫ ُﻢَﻠْﻌَﻳَﻭ ﺎَﻣﻲِﻓ ِّﺮَﺒْﻟﺍ ِۚﺮْﺤَﺒْﻟﺍَﻭ ُﻂُﻘْﺴَﺗ ﺎَﻣَﻭ ﻦِﻣ ٍﺔَﻗَﺭَﻭ ﺎَﻬُﻤَﻠْﻌَﻳ ﺎَّﻟِﺇﺎَﻟَﻭ ٍﺔَّﺒَﺣ ﻲِﻓ ِﺕﺎَﻤُﻠُﻇ ٍﺐْﻃَﺭ ﺎَﻟَﻭ ِﺽْﺭَﺄْﻟﺍ ٍﺲِﺑﺎَﻳ ﺎَﻟَﻭﺎَّﻟِﺇ ﻲِﻓ ٍﻦﻴِﺒُّﻣ ٍﺏﺎَﺘِﻛ
 
(10) তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না। (Al-Jinn: 26)
ِﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ُﻢِﻟﺎَﻋ ﺎَﻠَﻓ ُﺮِﻬْﻈُﻳ ٰﻰَﻠَﻋ ِﻪِﺒْﻴَﻏ ﺍًﺪَﺣَﺃ
 
(11) যেদিন আল্লাহ সব পয়গম্বরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে? তাঁরা বলবেনঃ আমরা অবগত নই, আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে মহাজ্ঞানী। (Al-Maaida: 109)
ُﻊَﻤْﺠَﻳ َﻡْﻮَﻳ ُﻪَّﻠﻟﺍ َﻞُﺳُّﺮﻟﺍ ُﻝﻮُﻘَﻴَﻓ ﺍَﺫﺎَﻣ ﺍﻮُﻟﺎَﻗ ْۖﻢُﺘْﺒِﺟُﺃﺎَﻟ َﻢْﻠِﻋ ۖﺎَﻨَﻟ َﻚَّﻧِﺇ َﺖﻧَﺃ ُﻡﺎَّﻠَﻋ ِﺏﻮُﻴُﻐْﻟﺍ
 
(12) যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না। (Saba: 14)
ﺎَّﻤَﻠَﻓ ﺎَﻨْﻴَﻀَﻗ ِﻪْﻴَﻠَﻋ َﺕْﻮَﻤْﻟﺍ ْﻢُﻬَّﻟَﺩ ﺎَﻣ ِﻪِﺗْﻮَﻣ ٰﻰَﻠَﻋ ﺎَّﻟِﺇِﺽْﺭَﺄْﻟﺍ ُﺔَّﺑﺍَﺩ ُﻞُﻛْﺄَﺗ ُۖﻪَﺗَﺄَﺴﻨِﻣ ﺎَّﻤَﻠَﻓ َّﺮَﺧ ِﺖَﻨَّﻴَﺒَﺗ ُّﻦِﺠْﻟﺍﻥَﺃ ْﻮَّﻟ َﻥﻮُﻤَﻠْﻌَﻳ ﺍﻮُﻧﺎَﻛ َﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ﺎَﻣ ِﻦﻴِﻬُﻤْﻟﺍ ﺍﻮُﺜِﺒَﻟﻲِﻓ ِﺏﺍَﺬَﻌْﻟﺍ
 
(13) আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? (Al-An’aam: 50)
ﻞُﻗ ُﻝﻮُﻗَﺃ ﺎَّﻟ ْﻢُﻜَﻟ ﻱِﺪﻨِﻋ ِﻪَّﻠﻟﺍ ُﻦِﺋﺍَﺰَﺧ ﺎَﻟَﻭ ُﻢَﻠْﻋَﺃُﻝﻮُﻗَﺃ ﺎَﻟَﻭ َﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ْﻢُﻜَﻟ ﻲِّﻧِﺇ ٌۖﻚَﻠَﻣ ْﻥِﺇ ُﻊِﺒَّﺗَﺃ ﺎَّﻟِﺇ ﺎَﻣٰﻰَﺣﻮُﻳ ْﻞُﻗ َّۚﻲَﻟِﺇ ﻱِﻮَﺘْﺴَﻳ ْﻞَﻫ ﺮﻴِﺼَﺒْﻟﺍَﻭ ٰﻰَﻤْﻋَﺄْﻟﺍُۚ ﺎَﻠَﻓَﺃ ﻥﻭُﺮَّﻜَﻔَﺘَﺗ
 
 
মতভেদকারীদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআন যা বলেঃ
 
উপরের আয়াতগুলো দ্বারা আল্লাহ তায়ালা গায়েব সম্পর্কে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যাতে তার বান্দাদের কোন সন্দেহ না থাকে। কিন্তু কোরআনের স্পষ্ট নির্দেশনা পেয়েও যারা তা অবিশ্বাস করে, এর বিপক্ষে অন্য প্রমাণ খোঁজ করে এবং মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করে তাদের জন্য কোরআন কি বলে সেটা একটু দেখি।
 
( 1 ) আরও দিয়েছিলাম তাদেরকে ধর্মের সুস্পষ্ট প্রমাণাদি। অতঃপর তারা জ্ঞান লাভ করার পর শুধু পারস্পরিক জেদের বশবর্তী হয়ে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তারা যে বিষয়ে মতভেদ করত, আপনার পালনকর্তা কেয়ামতের দিন তার ফয়সালা করে দেবেন।
( Al-Jaathiya: 17 )
ﻢُﻫﺎَﻨْﻴَﺗﺁَﻭ َﻦِّﻣ ٍﺕﺎَﻨِّﻴَﺑ ۖ ِﺮْﻣَﺄْﻟﺍ ﺍﻮُﻔَﻠَﺘْﺧﺍ ﺎَﻤَﻓ ﺎَّﻟِﺇ ﻦِﻣ ِﺪْﻌَﺑ ﺎَﻣُﻢُﻫَﺀﺎَﺟ ُﻢْﻠِﻌْﻟﺍ ﺎًﻴْﻐَﺑ ۚ ْﻢُﻬَﻨْﻴَﺑ َّﻥِﺇ َﻚَّﺑَﺭ ﻲِﻀْﻘَﻳ ْﻢُﻬَﻨْﻴَﺑ َﻡْﻮَﻳِﺔَﻣﺎَﻴِﻘْﻟﺍ ﺎَﻤﻴِﻓ ﺍﻮُﻧﺎَﻛ َﻥﻮُﻔِﻠَﺘْﺨَﻳ ِﻪﻴِﻓ ٤٥﴿ ﴾١٧ :
 
(2) অতঃপর তাদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন দল মতভেদ সৃষ্টি করল। সুতরাং যালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের দুর্ভোগ। ( Az-Zukhruf: 65 )
َﻒَﻠَﺘْﺧﺎَﻓ ُﺏﺍَﺰْﺣَﺄْﻟﺍ ﻦِﻣ ۖ ْﻢِﻬِﻨْﻴَﺑ َﻦﻳِﺬَّﻠِّﻟ ٌﻞْﻳَﻮَﻓ ﺍﻮُﻤَﻠَﻇِﺏﺍَﺬَﻋ ْﻦِﻣ ٍﻡْﻮَﻳ ٍﻢﻴِﻟَﺃ ٤٣﴿ ﴾٦٥ :
 
(3) তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ করে তার ফয়সালা আল্লাহর কাছে সোপর্দ। ইনিই আল্লাহ, আমার পালনকর্তা, আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তাঁরই অভিমুখী হই। ( Ash-Shura: 10 )
ْﻢُﺘْﻔَﻠَﺘْﺧﺍ ﺎَﻣَﻭ ِﻪﻴِﻓ ﻦِﻣ ٍﺀْﻲَﺷ ُﻪُﻤْﻜُﺤَﻓ ﻰَﻟِﺇ ُﻢُﻜِﻟَٰﺫ ۚ ِﻪَّﻠﻟﺍ ُﻪَّﻠﻟﺍﻲِّﺑَﺭ ِﻪْﻴَﻠَﻋ ِﻪْﻴَﻟِﺇَﻭ ُﺖْﻠَّﻛَﻮَﺗ ُﺐﻴِﻧُﺃ ٤٢﴿ ﴾١٠ :
 
(4) আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতঃপর তাতে মতভেদ সৃষ্টি হয়। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের মধ্যে ফয়সালা হয়ে যেত। তারা কোরআন সমন্ধে এক অস্বস্তিকর সন্দেহে লিপ্ত। ( Fussilat: 45 )
ﺎَﻨْﻴَﺗﺁ ْﺪَﻘَﻟَﻭ ﻰَﺳﻮُﻣ َﻒِﻠُﺘْﺧﺎَﻓ َﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ ۗ ِﻪﻴِﻓ ٌﺔَﻤِﻠَﻛ ﺎَﻟْﻮَﻟَﻭْﺖَﻘَﺒَﺳ ﻦِﻣ َﻚِّﺑَّﺭ َﻲِﻀُﻘَﻟ ۚ ْﻢُﻬَﻨْﻴَﺑ ْﻢُﻬَّﻧِﺇَﻭ ﻲِﻔَﻟ ٍّﻚَﺷ ُﻪْﻨِّﻣٍﺐﻳِﺮُﻣ ٤١﴿ ﴾٤٥ :
 
(5) তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেন, তারা ব্যতীত সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমার আল্লাহর কথাই পূর্ণ হল যে, অবশ্যই আমি জাহান্নামকে জ্বিন ও মানুষ দ্বারা একযোগে ভর্তি করব। ( Hud: 119 )
ﺎَّﻟِﺇ ﻦَﻣ َﻚُّﺑَﺭ َﻢِﺣَّﺭ ۚ ۗ ْﻢُﻬَﻘَﻠَﺧ َﻚِﻟَٰﺬِﻟَﻭ ُﺔَﻤِﻠَﻛ ْﺖَّﻤَﺗَﻭ َﻚِّﺑَﺭَّﻥَﺄَﻠْﻣَﺄَﻟ َﻢَّﻨَﻬَﺟ ِﺔَّﻨِﺠْﻟﺍ َﻦِﻣ ِﺱﺎَّﻨﻟﺍَﻭ َﻦﻴِﻌَﻤْﺟَﺃ : ١١﴿ ﴾١١٩
 
(6) আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ কোরআনকে বিশ্বাস করবে এবং কেউ কেউ বিশ্বাস করবে না। বস্তুতঃ তোমার পরওয়ারদেগার যথার্থই জানেন দুরাচারদিগকে। ( Yunus: 40 )
ﻦَّﻣ ﻢُﻬْﻨِﻣَﻭ ُﻦِﻣْﺆُﻳ ﻢُﻬْﻨِﻣَﻭ ِﻪِﺑ ﻦَّﻣ ﺎَّﻟ ُﻦِﻣْﺆُﻳ ۚ ِﻪِﺑَﻚُّﺑَﺭَﻭ ﻦﻳِﺪِﺴْﻔُﻤْﻟﺎِﺑ ُﻢَﻠْﻋَﺃَ ١٠﴿ ﴾٤٠ :
 
(7) যারা অপরাধী, তারা বিশ্বাসীদেরকে উপহাস করত। ( Al-Mutaffifin: 29 )
َﻦﻳِﺬَّﻟﺍ َّﻥِﺇ ﺍﻮُﻣَﺮْﺟَﺃ َﻦِﻣ ﺍﻮُﻧﺎَﻛ ﺍﻮُﻨَﻣﺁ َﻦﻳِﺬَّﻟﺍَﻥﻮُﻜَﺤْﻀَﻳ ٨٣﴿ ٢٩:
 
(8) আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসকারী নয়। ( Yusuf: 103 )
ﺎَﻣَﻭ ُﺮَﺜْﻛَﺃ ِﺱﺎَّﻨﻟﺍ ْﻮَﻟَﻭ َﻦﻴِﻨِﻣْﺆُﻤِﺑ َﺖْﺻَﺮَﺣ : ١٢﴿ ١٠٣ ﴾
ওহী আর গায়েবঃ
 
কোরআনের বাণীগুলো থেকে এটা স্পষ্ট যে রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন না। রাসূল (সাঃ) নবুয়্যাতের আগে মক্কাবাসীর নিকট খুব প্রিয় এবং বিশ্বস্থ একজন ব্যক্তি হিসেবে সুনাম থাকলেও নবুয়্যাতের পর অধিকাংশ লোক মুহাম্মদ (সাঃ) কে ঘৃণা করতে শুরু করে। অনেকে তাঁকে হত্যা করার চেষ্টাও করেছিল। এ সব কারণে মুহাম্মদ (সাঃ) কে প্রায় সময় বিপদের মোকাবেলা করতে হত। কিন্তু তাঁকে নিয়ে কে কী ষড়যন্ত্র করছে তা তিনি জানবেন কি করে? আল্লাহই ছিলেন তাঁর সাহায্যকারী। কাফেরদের সব ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা আল্লাহপাক হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে তাঁর প্রিয় রাসূল (সাঃ) কে জানিয়ে দিতেন। যেমন ইসলামের প্রথম দিকের যুদ্ধগুলোতে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল কাফেরদের তুলনায় অনেক কম। তাই মুসলিমদের মনে একটা ভয় থেকেই যেত যে তাঁরা এতগুলো কাফেরদের বিরুদ্ধে জিতবে কিনা। এ অবস্থায় আল্লাহপাক জিব্রাইলকে দিয়ে জয়ের সুসংবাদ জানিয়ে দিতেন তাঁর প্রিয় হাবিবকে যাতে মুসলিমদের মনে সাহস আসে।
 
সূরা আনফালে তার সম্পর্কে আয়াত রয়েছে নিম্নরূপঃ
“হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন। এখন বোঝা হালকা করে দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর এবং তিনি জেনে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্য দূর্বলতা রয়েছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যদি দৃঢ়চিত্ত একশ লোক বিদ্যমান থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর উপর। আর যদি তোমরা এক হাজার হও তবে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জয়ী হবে দু’হাজারের উপর আর আল্লাহ রয়েছেন দৃঢ়চিত্ত লোকদের সাথে। ( Sura Anfaal: 65,66 )
ﺎَﻳ ُّﻲِﺒَّﻨﻟﺍ ﺎَﻬُّﻳَﺃ ِﺽِّﺮَﺣ َﻦﻴِﻨِﻣْﺆُﻤْﻟﺍ ﻰَﻠَﻋ ِۚﻝﺎَﺘِﻘْﻟﺍ ﻥِﺇ ﻦُﻜَﻳْﻢُﻜﻨِّﻣ َﻥﻭُﺮْﺸِﻋ َﻥﻭُﺮِﺑﺎَﺻ ﺍﻮُﺒِﻠْﻐَﻳ ِۚﻦْﻴَﺘَﺋﺎِﻣ ﻦُﻜَﻳ ﻥِﺇَﻭ ﻢُﻜﻨِّﻣٌﺔَﺋﺎِّﻣ ﺍﻮُﺒِﻠْﻐَﻳ َﻦِّﻣ ﺎًﻔْﻟَﺃ ﺍﻭُﺮَﻔَﻛ َﻦﻳِﺬَّﻟﺍ ْﻢُﻬَّﻧَﺄِﺑ ٌﻡْﻮَﻗ ﺎَّﻟ َﻥﻮُﻬَﻘْﻔَﻳ‏[ ٨ ٦٥ : ‏]
 
َﻥﺂْﻟﺍ َﻒَّﻔَﺧ ْﻢُﻜﻨَﻋ ُﻪَّﻠﻟﺍ َﻢِﻠَﻋَﻭ َّﻥَﺃ ۚﺎًﻔْﻌَﺿ ْﻢُﻜﻴِﻓ ﻥِﺈَﻓ ﻦُﻜَﻳﻢُﻜﻨِّﻣ ٌﺔَﺋﺎِّﻣ ٌﺓَﺮِﺑﺎَﺻ ﺍﻮُﺒِﻠْﻐَﻳ ِۚﻦْﻴَﺘَﺋﺎِﻣ ﻥِﺇَﻭ ْﻢُﻜﻨِّﻣ ﻦُﻜَﻳ ٌﻒْﻟَﺃِﻦْﻴَﻔْﻟَﺃ ﺍﻮُﺒِﻠْﻐَﻳ ِﻥْﺫِﺈِﺑ ُﻪَّﻠﻟﺍَﻭ ِۗﻪَّﻠﻟﺍ َﻊَﻣ َﻦﻳِﺮِﺑﺎَّﺼﻟﺍ ‏[ : ٦٦ ٨ ]
 
এছাড়া সূরা ইউসূফের শেষের দিকে ১০২ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেন- “এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি। আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল এবং চক্রান্ত করছিল”। ( Yusuf: 102 )
َﻚِﻟَٰﺫ ْﻦِﻣ ِﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ِﺀﺎَﺒﻧَﺃ ِﻪﻴِﺣﻮُﻧ َۖﻚْﻴَﻟِﺇ ﺎَﻣَﻭ َﺖﻨُﻛ ْﻢِﻬْﻳَﺪَﻟ ْﺫِﺇﺍﻮُﻌَﻤْﺟَﺃ َﻥﻭُﺮُﻜْﻤَﻳ ْﻢُﻫَﻭ ْﻢُﻫَﺮْﻣَﺃ : ١٢﴿ ١٠٢ ﴾
 
মক্কার ইহুদীরা রাসূল (সাঃ) কে বিপদে ফেলার জন্য অনেক জটিল জটিল প্রশ্ন করতো। তারা একবার প্রশ্ন করেছিল- “আপনি যদি সত্যিই আল্লাহর নবী হন, তবে বলুন ইয়াকুব পরিবার সিরিয়া থেকে মিসরে কেন স্থানান্তরিত হয়েছিল এবং ইউসুফ (সাঃ) এর ঘটনা কি
ছিল?” এসব ঘটনা তাওরাতে বর্ণিত ছিল। আর ইহুদীরা ভাবতো মুহাম্মদ (সাঃ) নিরক্ষর। তাই তাওরাত থেকে এসব জিনীস জেনে নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না। কিন্তু আল্লাহ পাক ওহীর মাধ্যমে ইউসুফ (আঃ) ও তার পরিবার সম্পর্কে এত সুন্দর এবং বিস্তারিত বর্ণনা দিলেন যে, ইহুদীরা আশ্চর্য হয়ে গেল। প্রকৃতপক্ষে রাসূল (সাঃ) এর কাছে হযরত ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনা ছিল হাজারো বছরের পুরনো যা একমাত্র ওহী ছাড়া কোন ক্ষমতা বলেই জানা
সম্ভব ছিল না। তাই সূরার শেষে আল্লাহ তায়ালা তাঁর হাবিবকে সম্বোধন করে বলতেছেন –“ ِﺀﺎَﺒﻧَﺃ ِﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ِﻪﻴِﺣﻮُﻧَﻚْﻴَﻟِﺇ ” অর্থাৎ এসব কাহিনী গায়েবের অন্তর্ভুক্ত যা আমি আপনাকে দিয়ে থাকি। যখন ইউসুফেকে তাঁর ভাইয়েরা কূপে নিক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত বা কলাকৌশল করছিল তখন আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া পবিত্র কুরআনে আরো বলছে- এ হলো গায়েবী সংবাদ, যা আমি আপনাকে পাঠিয়ে থাকি। আর আপনি তো তাদের কাছে ছিলেন না, যখন প্রতিযোগিতা করছিল যে, কে প্রতিপালন করবে মারইয়ামকে এবং আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা ঝগড়া করছিলো। (Aali Imraan: 44)
َﻚِﻟَٰﺫ ْﻦِﻣ ِﺐْﻴَﻐْﻟﺍ ِﺀﺎَﺒﻧَﺃ ِﻪﻴِﺣﻮُﻧ َۚﻚْﻴَﻟِﺇ ﺎَﻣَﻭ َﺖﻨُﻛ ْﻢِﻬْﻳَﺪَﻟ ْﺫِﺇَﻥﻮُﻘْﻠُﻳ ْﻢُﻬُّﻳَﺃ ْﻢُﻬَﻣﺎَﻠْﻗَﺃ َﻢَﻳْﺮَﻣ ُﻞُﻔْﻜَﻳ ﺎَﻣَﻭ َﺖﻨُﻛ ْﻢِﻬْﻳَﺪَﻟ ْﺫِﺇَﻥﻮُﻤِﺼَﺘْﺨَﻳ : ٤٤ ﴿٣ ﴾
 
এরকম হাজারো ঘটনা আছে যেখানে আল্লাহ তায়ালা ওহীর মাধ্যমে তাঁর প্রিয় হাবিবকে সাহায্য করেছেন। এসব বিষয় দুনিয়ার কেউ জানত না, জানত শুধু মুহাম্মদ (সাঃ) একজন। মূলত প্রিয় রাসূল (সাঃ) যে আল্লাহর নবী তা কফেরদের বিশ্বাস করানোর জন্য এটা ছিলো আল্লাহ তায়ালার কৌশল। এটাকেই অনেকে গায়েব হিসেবে জানে। কিন্তু এটা কি আসলে গায়েব? এটা গায়েব হলে ওহী কোনটা? তাছাড়া এসব বিষয় গায়েব হয়ে থাকলে সেই গায়েবতো রাসূল (সাঃ) এর আগে হযরত জিব্রাইল (আঃ) জানতেন। মূলত এসব বিষয় রাসুল (সাঃ) ওহীর মাধ্যমে জানতেন। আর নবী রাসূলের কাছে আল্লাহ তায়ালা ওহী পাঠাবেন তাতো স্বাভাবিক ব্যাপার। কারণ ওহী ছাড়া নবী হয় না। সুতরাং এ বিষয়ে বিতর্ক না করে বরং কোরআনের আয়াতগুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাই হবে মু’মিনদের ঈমানি দায়িত্ব। আল্লাহ্ আমাদের বুঝার তাওফিক দিন। আমীন।
 
(1)  আপনি বলে দিন, আমি (নবী) আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি (নবী) যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না।  আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।  (Al-A’raaf: 188)
ﻗُﻞ ﻟَّﺎ ﺃَﻣْﻠِﻚُ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻲ ﻧَﻔْﻌًﺎ ﻭَﻟَﺎ ﺿَﺮًّﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺷَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ۚ ﻭَﻟَﻮْﻛُﻨﺖُ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐَ ﻟَﺎﺳْﺘَﻜْﺜَﺮْﺕُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮِ ﻭَﻣَﺎ ﻣَﺴَّﻨِﻲَﺍﻟﺴُّﻮﺀُ ۚ ﺇِﻥْ ﺃَﻧَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﻧَﺬِﻳﺮٌ ﻭَﺑَﺸِﻴﺮٌ ﻟِّﻘَﻮْﻡٍ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﴿٧ : ١٨٨ ﴾
 
(2)  আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি (নবী) আলেমুল গায়েব নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? (Al-An’aam: 50)
ﻗُﻞ ﻟَّﺎ ﺃَﻗُﻮﻝُ ﻟَﻜُﻢْ ﻋِﻨﺪِﻱ ﺧَﺰَﺍﺋِﻦُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐَ ﻭَﻟَﺎﺃَﻗُﻮﻝُ ﻟَﻜُﻢْ ﺇِﻧِّﻲ ﻣَﻠَﻚٌۖ ﺇِﻥْ ﺃَﺗَّﺒِﻊُ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﻳُﻮﺣَﻰٰ ﺇِﻟَﻲَّۚ ﻗُﻞْ ﻫَﻞْﻳَﺴْﺘَﻮِﻱ ﺍﻟْﺄَﻋْﻤَﻰٰ ﻭَﺍﻟْﺒَﺼِﻴﺮُۚ ﺃَﻓَﻠَﺎ ﺗَﺘَﻔَﻜَّ
 
প্রিয়পাঠক! উপরে উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ তয়ালা নবী (সাঃ)কে সুস্পষ্ট ডাইরেক্ট নির্দেশ দিয়েছেন, হে নবী আপনি সারা বিশ্বের সমস্ত মানুষকে জানিয়ে দেন “আপনি আলেমুল গায়েব নন” ।
 
(3)  আর আমি (নবী) তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি (নবী) গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব। (Hud: 31)
ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻗُﻮﻝُ ﻟَﻜُﻢْ ﻋِﻨﺪِﻱ ﺧَﺰَﺍﺋِﻦُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐَ ﻭَﻟَﺎﺃَﻗُﻮﻝُ ﺇِﻧِّﻲ ﻣَﻠَﻚٌ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻗُﻮﻝُ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﺗَﺰْﺩَﺭِﻱ ﺃَﻋْﻴُﻨُﻜُﻢْ ﻟَﻦﻳُﺆْﺗِﻴَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﻴْﺮًﺍ ۖ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﻤَﺎ ﻓِﻲ ﺃَﻧﻔُﺴِﻬِﻢْ ۖ ﺇِﻧِّﻲﺇِﺫًﺍ ﻟَّﻤِﻦَ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ ﴿١١ : ٣١ ﴾
 
প্রিয় পাঠক! উপরে উল্লেখিত আয়াতের প্রথম অংশে আল্লাহ তায়ালা বলে দিয়েছেন সারা বিশ্বের সমস্ত মানুষ নবী রাসূলগণকে গায়েব জানে বলবে’ত দূরের কথা,এমনকি নবী তিনি নিজেও বলেননা তিনি গায়েব জানেন। আর আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহ
তায়ালা বলে দিয়েছেন যে, সারা বিশ্বের সমস্ত মানুুষ নবী রাসূলগণকে গায়েব জানে বললে দোষী সাব্যস্ত হবে । যদি নবী তিনি নিজেও বলেন তিনি গায়েব জানেন, তাহলে তিনি নিজেও দোষী সাব্যস্ত হবে।
 
(4)  এটি গায়বের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরন করছি। ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না। আপনি ধৈর্য্যধারণ করুন। যারা ভয় করে চলে, তাদের পরিণাম ভাল, সন্দেহ নেই। (Hud: 49)
ﺗِﻠْﻚَ ﻣِﻦْ ﺃَﻧﺒَﺎﺀِ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐِ ﻧُﻮﺣِﻴﻬَﺎ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ۖ ﻣَﺎ ﻛُﻨﺖَ ﺗَﻌْﻠَﻤُﻬَﺎ ﺃَﻧﺖَﻭَﻟَﺎ ﻗَﻮْﻣُﻚَ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻞِ ﻫَٰﺬَﺍ ۖ ﻓَﺎﺻْﺒِﺮْ ۖ ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﻌَﺎﻗِﺒَﺔَﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﴿١١ : ٤٩ ﴾
 
প্রিয়পাঠক! আল্লাহ তায়ালা উপরে উল্লেখিত আয়াতে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন, নবী (সাঃ) এবং নবীজির জাতি গায়েবের খবর জানেনা। যার কারণে আল্লাহ তা’য়ালা নবী (সাঃ)কে গায়েবের সংবাদ ওহীর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া লাগত।
 
(5) যেদিন আল্লাহ সব পয়গম্বরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে? তাঁরা বলবেনঃ আমরা অবগত নই(অর্থাৎ আলেমুল গায়েব নই), আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে মহাজ্ঞানী (অর্থাৎ মহা আলেমুল গায়েব)। (Al-Maaida: 109)
ﻳَﻮْﻡَ ﻳَﺠْﻤَﻊُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟﺮُّﺳُﻞَ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻣَﺎﺫَﺍ ﺃُﺟِﺒْﺘُﻢْۖ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻟَﺎ ﻋِﻠْﻢَﻟَﻨَﺎۖ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﻋَﻠَّﺎﻡُ ﺍﻟْﻐُﻴُﻮﺏ
 
প্রিয়পাঠক! আল্লাহ ত’য়ালা উপরে উল্লেখিত আয়াতে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছে, আল্লাহ তায়ালা যখন কাল কিয়ামতের দিন সমস্ত নবীগণকে একত্রিত করে প্রশ্নকরবেন তখন তারা বলবে আমরা আলেমুল গায়েব নই বরং একমাত্র আপনিই আলেমুল গায়েব।
 
(6) বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে। (An-Naml: 65)
ﻗُﻞ ﻟَّﺎ ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﻦ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُﻭَﻣَﺎ ﻳَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ ﺃَﻳَّﺎﻥَ ﻳُﺒْﻌَﺜُﻮﻥَ ﴿٢٧ : ٦٥ ﴾
 
প্রিয়পাঠক! আল্লাহ তায়ালা উপরে উল্লেখিত আয়াতে সুস্পষ্ট ভাষায় ডাইরেক্ট বলে দিয়েছেন, শুধু মাত্র নবী রাসূল গায়েব জানবে দূরের কথা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আকাশ যমিনের কোন বাসিন্দাই গায়েব জানে না।
 
(7)  তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে। (Al-An’aam: 59)
ﻭَﻋِﻨﺪَﻩُ ﻣَﻔَﺎﺗِﺢُ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐِ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻬَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﻫُﻮَۚ ﻭَﻳَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﺎ ﻓِﻲﺍﻟْﺒَﺮِّ ﻭَﺍﻟْﺒَﺤْﺮِۚ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺴْﻘُﻂُ ﻣِﻦ ﻭَﺭَﻗَﺔٍ ﺇِﻟَّﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻬَﺎ ﻭَﻟَﺎ ﺣَﺒَّﺔٍﻓِﻲ ﻇُﻠُﻤَﺎﺕِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻭَﻟَﺎ ﺭَﻃْﺐٍ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺎﺑِﺲٍ ﺇِﻟَّﺎ ﻓِﻲ ﻛِﺘَﺎﺏٍﻣُّﺒِﻴﻦ
 
প্রিয়পাঠক !  উপরে উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা সুস্পষ্ট ভাষায় ডাইরেক্ট ঘোষনা করেদিয়ে ছেন যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেও বা নবী রাসূল গায়েব খবর জানবে’ত দূরের কথা। একমাত্র আল্লাহ ত’য়ালা ছাড়া গায়েবের চাবি কাঠিই অন্য কারো
কাছে নেই।
 
এতক্ষণ আমারা কোরআনের আলোচনাই দেখেছি, এখন দেখবো সারা বিশ্বের গ্রহণ যোগ্য তাফসীর, তাফসীর ইবনে কাসীরে কি লেখা আছেঃ 
 
(১) “আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা মুহাম্মাদ(সা)- কে বলেছেনঃ ‘হে রাসুল! তুমি বলে দেও, আর আমি এই দাবীও করি না যে, আমি ভবিষ্যতের বিষয় অবগত রয়েছি’। ভবিষ্যতের জ্ঞানতো একমাত্র আল্লাহ’র রয়েছে। তিনি আমাকে যে টুকু জানিয়েছেন আমি শুধু ঐটুকুই জানি” [তাফসীর ইবনে কাসীর, খণ্ড ৮-১১, পারা-৭,সুরা-আন’আম, আয়াতঃ৫০] 
 
(২) “ইরশাদ হচ্ছে- অদৃশ্যের কথা আল্লাহ ছাড়া আর কেহ জানেনা” [তাফসীর ইবনে কাসীর, খণ্ড ৮-১১, পারা-৭,সুরা-আন’আম, আয়াতঃ৫৯]
 
(৩) আল্লাহ তা’আলা স্বীয় রাসুল(সা)কে নির্দেশ দিচ্ছেন- হে নবী! তুমি সমস্ত বিষয়ের সম্পর্ক আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেও। নিজের সম্পর্কে তুমি বলে দেও, ভবিষ্যতের জ্ঞান আমারও নেই। তবে হ্যাঁ, আল্লাহ যেটা বলে দেন একমাত্র সেটাই আমি বলতে পারি। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ ‘তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তার অদৃশ্যের জ্ঞান কারও নিকট প্রকাশ করেননা’(কোরআন-৭২:২৬)” [তাফসীর ইবনে কাসীর, খণ্ড ৮-১১, পারা-৯,সুরা-আ’রাফ, আয়াতঃ১৮৮]
 
(৪) “আল্লাহ তা’আলা স্বীয় রাসুল(সা)কে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তিনি যেন সারা জগতবাসীকে জানিয়ে দেন যে, অদৃশ্যের খবর(আল্লাহ ছাড়া) কেউ জানে না। অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোন মানব,দানব এবং ফেরেশতা গায়েব বা অদৃশ্যের খবর জানে না” [তাফসীর ইবনে কাসীর, খণ্ড ১৫, পারা-২০,সুরা-নামল, আয়াতঃ২৭]
 
(৫) “নুহ(আঃ) তার কাওমকে খবর দিচ্ছেন যে, আল্লাহর ধন-ভাণ্ডারকে হেরফের করার ক্ষমতা তার নেই। তিনি অদৃশ্যের খবরও জানেন না। তবে আল্লাহ যা জানিয়ে দেন তা জানতে পারেন” [তাফসীর ইবনে কাসীর, খণ্ড ১২-১৩, পারা-১২,সুরা-হুদ, আয়াতঃ৩১]
 
এতক্ষণ আমারা কোরআনের ও তাফসীরের আলোচনাই দেখেছি, এখন দেখবো রাসূল (সাঃ)-এর ছহীহ হাদিসের আলোকে রাসূল (সাঃ) কি বলেছেন: 
 
(১) হযরত রুবাইয়্যি বিনতে মুয়াওয়াজ বিন আফরা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন : আমার বিয়েতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এসেছিলেন। তিনি এসে আমার পাশে বসলেন, যেমনভাবে তুমি বসেছ। এমন সময় আমাদের কিশোরী মেয়েরা দফ বাজিয়ে গান করতে লাগল। তাঁর বদর যুদ্ধে যে সকল বাপ—দাদারা শহীদ হয়েছিল, তাদের শানে বীরত্ব গাঁথা বর্ণনা করতে লাগল। হঠাৎ কিশোরীদের মধ্যে একজন বলে উঠল : আমাদের মাঝে এমন এক নবী রয়েছেন যিনি আগামীকালের খবর ‘গায়েব’ জানেন। একথা শুনে মহানবী (সা.) বললেন, এই মেয়ে! তুমি একথা বলো না। বরং আগে যা বলেছিলে তা বলতে থাকো।” (বুখারী শরীফের সূত্রে মিশকাত শরীফ, ২৭১ পৃষ্ঠা)
 
প্রিয়পাঠক! এ হাদীসে রাসূল(সাঃ) ‘গায়েব জানেন’ এ কথা বলাতে ঐ মেয়েকে রাসূল (সাঃ) বারণ করার ঘটনার মধ্যে দিয়েই প্রমাণিত হয় যে, মহানবী (সা.) গায়েব জানেন না। তিনি ‘আলিমুল গায়েব’ নন এবং  কেউ এমন অযোক্তিক ও অনুচিত কথা বলুক তাও তিনি পছন্দ করেন না।
 
(২) হযরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন : মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, হাশরের ময়দানে আমি তোমাদের কল্যাণকামী অগ্রদূত হিসেবে হাউজে কাউ সারের নিকট অবস্থান করব। যেই আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে সেই এখান
থেকে পান করবে। আর যে একবার পান করবে সে কখনো আর তৃষ্ণার্ত হবে না। এরপর আমার কাছে এমন একটি দল আসবে, যাদেরকে আমি চিনবো এবং তারাও আমাকে চিনবে। কিন্তু আমার আর তাদের মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে যাবে। তখন আমি
বলব, এরা তো আমার উম্মত! তখন বলা হবে, আপনি ইন্তেকালের পর তারা দীনকে পরিবর্তন করে নতুন কি উদ্ভাবন করেছিল আপনি তা জানেন না। তখন আমি বলল : যারা আমার ইন্তিকালের পর আমার রেখে যাওয়া দ্বীন পরিবর্তন করেছিল, তারা আজ
আমার থেকে দূর হয়ে যাও! ” (বুখারী শরীফের সূত্রে মিশকাত : ৪৮৭)
 
প্রিয়পাঠক! এই হাদীসে “আপনার পরে তারা কি সৃষ্টি করেছিল আপনি তা জানেন না”। (বাক্যের দ্বারা প্রমাণিত যে, প্রিয়নবী (সা.) গায়েব জানেন না।) 
 
(৩) অর্থ: “হযরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন : আমি রাসূল (সা.)-এর নিকট শুনেছি, তিনি ইন্তিকালের এক মাস পূর্বে বলেছেন, আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় অথচ এ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর নিকটই রয়েছে।” (মিশকাত : ৪৮০ পৃষ্ঠা )
 
প্রিয়পাঠক! উক্ত হাদীসে “আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় অথচ এ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর নিকটই রয়েছে” এ কথা বলার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূল (সা.) গায়েব জানতেন না। যদি জানতেন তাহলে আর একথা বলতেন না যে, “আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় অথচ এ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর নিকটই রয়েছে” বরং তিনি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিতেন।
 
(৪) অর্থ: “হাদীসে জিবরাঈলের মধ্যে আছে যে, হযরত জিবরাঈল (এ.) রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলেন যে, কিয়ামত কবে হবে? তখন মহানবী (সা.) বললেন : এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞাসাকারী থেকে বেশি জানে না।” (বুখারী : ১ : ১২; মুসলিম ১ : ২৯)
 
প্রিয়পাঠক! উক্ত হাদীসে “এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞাসাকারী থেকে বেশি জানে না” একথা বলার দ্বারা একথাই প্রমাণ হয় যে, রাসূল (সা.) আলিমুল গায়েব ছিলেন না। যদি তিনি আলিমুল গায়েব হতেন, তাহলে আর একথা না যে, “এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞাসাকারী থেকে বেশি জানে ন” অর্থাৎ নবী (সাঃ) থেকে জিবরাঈল (আঃ) বেশি জানে একথা বলতেন না। বরং নবী (সাঃ) যদি আলেমুল গায়েব হতেন তাহলে তিনি নিজেই জিবরাঈল (আঃ) থেকে বেশি জানতেন।
 
(৫) অর্থ: “হযরত হুযায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন : রাসূল ইরশাদ করেন, আমি জানিনা তোমাদের মধ্যে কতদিন বেঁচে থাকবো। সুতরাং আমার ইন্তিকালের পর যারা বেঁচে থাকবে তারা আবু বকর ও উমর (রা.)-এর অনুসরণ করবে।” (তিরমিযী
শরীফের সূত্রে মিশকাত শরীফ ৫৬০ পৃষ্ঠা)
 
প্রিয়পাঠক! উক্ত হাদীসের ” আমি জানিনা তোমাদের মধ্যে কতদিন বেঁচে থাকবো” এ কথা বলার দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, রাসূল (সা.) আলিমুল গায়েব ছিলেন না। যদি তিনি আলিমুল গায়েব হতেন, তাহলে আর এ কথা বলতেন না যে, ” আমি জানিনা তোমাদের মধ্যে কতদিন বেঁচে থাকবো”। বরং তিনি যদি আলেমুল গায়েব হতেন, তাহলে তিনি অবশ্যই অবশ্যই জানতেন যে তিনি কতদিন বেচে থাকবেন।
 
(৬) এক দীর্ঘ হাদীসে, আবু হোরায়রা(রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী করীম(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (কেয়ামতের দিন) সব মানুষ বেহুশ হয়ে পড়বে। তখন আমিই হব প্রথম ব্যক্তি, যে দণ্ডায়মান হব। তখন (দেখতে পাব) মুসা(আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর আরশ ধরে আছেন। আমি জানি না, যারা বেহুশ হয়ে পরেছিল তিনি তাদের মদ্ধে ছিলেন কি-না । (সহীহ বোখারী, খণ্ড-১০) 
 
প্রিয়পাঠক! উক্ত হাদীসে “আমি জানিনা” এর দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয় যে, রাসূল (সা.) আলিমুল গায়েব নন। কেননা তিনি আলেসুল গায়েব হলে “আমি জানিনা” একথা বলতেন না। 
 
এবার অন্যান্য নবী রাসূলগণের কথা বাদ দিলাম, এখন দেখা যাক যারা শুধু মাত্র আমাদের নবী (সাঃ)কে আলেমুল গায়েব বিশ্বাস করে তাদের হুকুম কি?
 
(১) অর্থ: “হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন : যে ব্যক্তি মনে করে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আগামীকাল কি হবে তা জানেন অর্থাৎ গায়েব জানেন, তাহলে সে যেন আল্লাহর উপর অপবাদ আরোপ করল। কেননা স্বয়ং আল্লাহই বলেছেন : হে নবী! আপনি বলে দিন, আসমান-যমীনের গায়েবের সংবাদ একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না”। (তাফসীরে ইবনে কাসীর ২ : ৪৯১)
 
প্রিয়পাঠক!
উক্ত হাদীসে রাসূল (সা.) গায়েব জানেন একথার বিশ্বাসকারীকে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) আল্লাহর উপর অপবাদ আরোপকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এতেই বুঝা যায় যে, “রাসূল গায়েব জানেন” এই মন্তব্য কত বড় অন্যায় এবং এ
ধরণের বিশ্বাস কত মারাত্মক অপরাধ।
 
(২) অর্থ: “হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তোমাকে বলবে যে, মুহাম্মদ (সা.) তাঁর প্রভুকে দেখেছেন, নিঃসন্দেহে সে মিথ্যাবাদী। কেননা আল্লাহ বলেছেন : কোন দৃষ্টিশক্তি তাকে অনুভব করতে পারে না। আর যে ব্যক্তি তোমাকে বলে যে, মুহাম্মদ (সা.) গায়েব জানেন, সেও মিথ্যাবাদী। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউই গায়েব জানেন না ।” (বুখারী ২ : ১০৯৮)
 
প্রিয়পাঠক! উক্ত হাদীসে রাসূল (সা.)-এর জন্য গায়েব জানা সাব্যস্তকারীকে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) স্পষ্ট মিথ্যাবাদী বলে আখ্যায়িত করেছেন তাঁর শেষ ঠিকানা কোথায় হবে তা এবার আপনারাই ভেবে দেখুন।
 
(৩) ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর লিখিত গ্রন্থ ‘ফিকহে আকবর’ যা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকায়েদ শাস্ত্রের ওপর লেখা। তার ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘শরহে ফিকহে আকবর’-এ আল্লামা মোল্লাহ আলী কারী (রহঃ) লিখেন, হানাফী মাজহাবের আলেমগণ একথা পরিষ্কারভাবেই ঘোষণা করেন, রাসূলকে যে ব্যক্তি আলেমুল গায়েব বিশ্বাস করবে, সে কাফের হবে। কারণ এ বিশ্বাস পবিত্র কোরআনের (সূরায়ে নামালের) আয়াত “আপনি বলে দিন যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আকাশ-যমিনের কোনো বাসিন্দাই গায়েব জানে না”-এর সরাসরি বিরোধী।
 

৭৩৮০ | সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) পরিচ্ছেদঃ ৯৭/৪. আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না- (সূরাহ জ্বিন ৭২/২৬)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে- (সূরাহ লুক্বমান ৩১/৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে নাযিল করেছেন- (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১৬৬)। তাঁর অবগতি ব্যতীত কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না বা (তার বোঝা) হালকা করে না – (সূরাহ ফাতির ৩৫/১১)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল তাঁরই আছে- (সূরাহ ফুসসিলাত ৪১/৪৭)।

কোথায় যাচ্ছেন? আরো নতুন কিছু জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুনঃ   সমাজে প্রচলিত কিছু জাল হাদিস বা হাদিসের নামে মিথ্যা জেনে নিই পর্ব ৩

৭৩৮০.  ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় রবকে দেখেছেন, সে মিথ্যা বলল। কেননা আল্লাহ্ বলছেন, চক্ষু তাঁকে দেখতে পায় না। আর যে ব্যক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব জানেন, সেও মিথ্যা বলল। কেননা আল্লাহ্ বলেন, গায়িব জানেন একমাত্র আল্লাহ্। [৩২৩৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৬)

৭৩৮০ | সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) পরিচ্ছেদঃ ৯৭/৪. আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না- (সূরাহ জ্বিন ৭২/২৬)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে- (সূরাহ লুক্বমান ৩১/৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে নাযিল করেছেন- (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১৬৬)। তাঁর অবগতি ব্যতীত কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না বা (তার বোঝা) হালকা করে না – (সূরাহ ফাতির ৩৫/১১)। ক্বিয়ামাতের জ্ঞান কেবল তাঁরই আছে- (সূরাহ ফুসসিলাত ৪১/৪৭)।

৭৩৮০. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় রবকে দেখেছেন, সে মিথ্যা বলল। কেননা আল্লাহ্ বলছেন, চক্ষু তাঁকে দেখতে পায় না। আর যে ব্যক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব জানেন, সেও মিথ্যা বলল। কেননা আল্লাহ্ বলেন, গায়িব জানেন একমাত্র আল্লাহ্। [৩২৩৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৬)

৪৩৩৬ | সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ الله يعلم ما تحمل كل أنثى প্রত্যেক নারী যা গর্ভে ধারন করে এবং জরায়ু তে যা কিছু কমে ও বাড়ে আল্লাহ তা জানেন। غيض হ্রাস পেল । সুরা রা’দ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, كَبَاسِطِ كَفَّيْهِ যেমন, কেউ হাত বাড়িয়ে দেয়। এটি মুশরিকের দৃষ্টান্ত যারা ‘ইবাদাতে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যকে শরীক করে। যেমন পিপাসার্ত ব্যক্তি যে দূর থেকে পানি পাওয়ার আশা করে, অথচ পানি সংগ্রহ করতে সমর্থ হয় না। অন্যেরা বলেন, سَخَّرَ সে অনুগত হল।’’ مُتَجَاوِرَاتٌ পরস্পর নিকটবর্তী হল। الْمَثُلَاتُ (উপমা, দৃষ্টান্ত) مَثُلَةٌ-এর বহুবচন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, ‘ওরা কি ওদের পূর্বে যা ঘটেছে তারই অনুরূপ ঘটনারই প্রতীক্ষা করে? بِمِقْدَارٍ নির্দিষ্ট পরিমাণ। مُعَقِّبَاتٌ ফেরেশতা, যারা একের পর এক সকাল-সন্ধ্যায় বদলি হয়ে থাকে। যেমন عَقِيْبُ পিছনে (বদলি)। যেমন বলা হয় عَقَّبْتُ فِيْٓ إِثْرِهِ আমি তার পরে (বদলি) এসেছি। الْمِحَالِ শাস্তি كَبَاسِطِ كَفَّيْهِ إِلَى الْمَآءِ সে তৃষ্ণার্তের মত, যে নিজের দুই হাত পানির দিকে বাড়িয়ে দেয়, পানি পাওয়ার জন্য। رَابِيًا (বর্ধনশীল) رَبَايَرْبُوْ থেকে গঠিত। زَبَدٌ ফেনা, সর। الْمَتَاعُ যা দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়, যা উপভোগ করা হয়। جُفَاءً বলা হয়, গোশতের পাতিল যখন উত্তপ্ত করা হয়, তখন তার ওপরে ফেনা জমে। এরপর ঠান্ডা হয় এবং ফেনার বিলুপ্তি ঘটে। সেরূপ সত্য, বাতিল (মিথ্যা) থেকে আলাদা হয়ে থাকে।’’ الْمِهَادُ বিছানা يَدْرَءُوْنَ তারা প্রতিহত করে। دَرَأْتُهُ ও دَفَعْتُهُ আমি তাকে দূরে হটিয়ে দিলাম। মালায়িকাহ বলবেন, سَلَامٌ عَلَيْكُمْ তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। وَإِلَيْهِ مَتَابِ আমি তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করছি। أَفَلَمْيَيْئَسْ এটা কি তাদের কাছে প্রকাশ পায়নি, قَارِعَةٌ আকস্মিক বিপদ فَأَمْلَيْتُ আমি অবকাশ দিয়েছি। مَلِيِّ ও مِلَاوَةٌ হতে পঠিত। সে অর্থে مَلِيًّا ব্যবহৃত। প্রশস্ত ও দীর্ঘ যমীনকে مَلًى مِنَ الْأَرْضِ বলা হয়। أَشَقُّ (অধিক কঠিন) اِسْمِ تَفْضِيْلَ-مَشَقَّةِ থেকে গঠিত। مُعَقِّبَ পরিবর্তনশীল। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مُتَجَاوِرَاتٌ অর্থ, কিছু জমি কৃষি উপযোগী এবং কিছু জমি কৃষির অনুপযোগী। আর তাতে একটা থেকে দুই বা ততোধিক খেজুর গাছ উৎপন্ন হয় এবং কতিপয় যমীনে পৃথক পৃথকভাবে উৎপন্ন হয়। সেরূপ অবস্থা আদম (আঃ)-এর সন্তানদের। কেউ নেক্কার আর কেউ বদকার, অথচ সকলেই আদমের সন্তান। السَّحَابُ الثِّقَالُ পানিতে পূর্ণ মেঘমালা। كَبَاسِطِ كَفَّيْهِ তৃষ্ণার্ত ব্যক্তি মুখ দিয়ে পানি চায় এবং হাত দিয়ে পানির দিকে ইশারা করে। তারপর সে সর্বদা তা থেকে বঞ্চিত থাকে। سَالَتْ أَوْدِيَةٌ بِقَدَرِهَا নানাসমূহ তার পরিমাণ মাফিক প্রবাহিত হয়ে ‘‘বাতনে ওয়াদী’’ কে ভরে দেয়। زَبَدًا رَابِيًا প্রবাহিত ফেনা। লোহা ও অলংকার উত্তপ্ত করা হলে যেমন ময়লা বের হয়ে আসে।

কোথায় যাচ্ছেন? আরো নতুন কিছু জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুনঃ   কাফির বা KAFIR বিষয়ক আয়াত

৪৩৩৬। ইব্রাহিম ইবনু মুনযির (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত , নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইল্‌ম গায়েব এর চাবি কাঠি পাঁচটি, যা আল্লাহ ভিন্ন আর কেউ জানেনা। তা হল, আগামী দিন কি হবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা। মাতৃগর্ভে কি আছে তা আল্লাহ ভিন্ন আর কেউ জানেনা। বৃষ্টি কখন আসবে তা আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ জানেনা। কোন ব্যাক্তি জানেনা তার মৃত্যু কোথায় হবে এবং কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে তা আল্লাহ ভিন্ন আর কেউ জানেনা।

৪৪১৬ | সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌, তারই কাছে রয়েছে কিয়ামতের জ্ঞান (অর্থাৎ কখন ঘটবে)

৪৪১৬। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গায়েবের চাবি পাঁচটি। এরপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেনঃ কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্ তা’আলারই রয়েছে।

৬৮৭৫ | সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) পরিচ্ছেদঃ ৩১০৬. আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। (৭২ঃ ২৬)। (মহান আল্লাহর বাণী) কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে (৩১ঃ ৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে অবতীর্ণ করেছেন (৪ঃ ১৬৬)। কোন নারী তার গর্ভে কি ধারণ করবে এবং কখন তা প্রসব করবে তা তাঁর জানা আছে। কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্‌র হাতেই ন্যস্ত। আবূ আবদুল্লাহ্ [(বুখারী (রহঃ)] বলেন, ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেছেন, মহান আল্লাহ্‌ জ্ঞানের আলোকে সমস্ত সৃষ্টির উপর প্রকাশমান, আবার তিনি জ্ঞানের আলোকে সবকিছুতেই পরিলুপ্ত

৬৮৭৫। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ গায়েবের কুঞ্জি পাঁচটি, যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জাননা। (১) মাতৃজঠরে কি গুপ্ত রয়েছে তা জানেন একমাত্র আল্লাহ। (২) আগামীকাল কি সংঘটিত হবে তাও জানেন একমাত্র আল্লাহ (৩) বৃষ্টিপাত কখন হবে তাও একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জানে না। (৪) কে কোন ভূমিতে মারা যাবে তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জানে না। (৫) আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জানে না, কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে।

৬৮৭৬ | সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) পরিচ্ছেদঃ ৩১০৬. আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। (৭২ঃ ২৬)। (মহান আল্লাহর বাণী) কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে (৩১ঃ ৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে অবতীর্ণ করেছেন (৪ঃ ১৬৬)। কোন নারী তার গর্ভে কি ধারণ করবে এবং কখন তা প্রসব করবে তা তাঁর জানা আছে। কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্‌র হাতেই ন্যস্ত। আবূ আবদুল্লাহ্ [(বুখারী (রহঃ)] বলেন, ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেছেন, মহান আল্লাহ্‌ জ্ঞানের আলোকে সমস্ত সৃষ্টির উপর প্রকাশমান, আবার তিনি জ্ঞানের আলোকে সবকিছুতেই পরিলুপ্ত

কোথায় যাচ্ছেন? আরো নতুন কিছু জানার জন্য এই লেখাটি পড়ুনঃ   আশেক মাশুক বা এস্কে এলাহী বইয়ের মিথ্যাচার বা ভুল ভ্রান্তি

৬৮৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় প্রতিপালককে দেখেছে, অবশ্যই সে মিথ্যা বলল। কেননা তিনি (আল্লাহ) বলছেন, চক্ষুরাজি কখনো তাকে দেখতে পায় না। আর যে ব্যাক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব জানেন, অবশ্য সেও মিথ্যা বলল। কেননা তিনি (আল্লাহ) বলেন, গায়েব জানেন একমাত্র আল্লাহ।

৩৩৬ | সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) পরিচ্ছেদঃ ৭৬. আল্লাহর বাণীঃ ‘তিনি তাকে দেখেছেন আরেকবার’ এর ব্যাখ্যা এবং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইসরার রাতে তার প্রতিপালককে দেখেছিলেন কিনা সে প্রসঙ্গে

৩৩৬। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে হেলান দিয়ে বসেছিলাম। তখন তিনি বললেন, হে আবূ আয়িশা! তিনটি কথা এমন, যে এর কোন একটি বলল, সে আল্লাহ সম্পর্কে ভীষণ অপবাদ দিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সেগুলো কি? তিনি বললেন, যে এ কথা বলে যে, মুহাম্মাদ তার প্রতিপালককে দেখেছেন, সে আল্লাহর উপর ভীষণ অপবাদ দেয়। আমি তো হেলান অবস্থায় ছিলাম, এবার সোজা হয়ে বসলাম। বললাম, হে উমুল মু”মিনীন! থামুন। আমাকে সময় দিন, ব্যস্ত হবেন না। আল্লাহ তা’আলা কুরআনে কি ইরশাদ করেননিঃ “তিনি (রাসুল) তো তাঁকে (আল্লাহকে) স্পষ্ট দিগন্তে দেখেছেন, (২৩ঃ ৮১), অন্যত্র “নিশ্চয়ই তিনি তাকে আরেকবার দেখেছিলেন” (৫৩ঃ ১৩)

আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমিই এ উষ্মতের প্রথম ব্যাক্তি, যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছিলেনঃ তিনি তো ছিলেন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কেবলমাত্র এ দু-বারই আমি তাঁকে তাঁর আসল আকৃতিতে দেখেছি। আমি তাঁকে আসমান থেকে অবতরণ করতে দেখেছি। তাঁর বিরাট দেহ ঢেকে ফেলেছিল আসমান ও যমীনের মধ্যবতী সবটুকু স্থান।

আয়িশা (রাঃ) আরও বলেন, তুমি কি শোননি? আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ তিনি (আল্লাহ) দৃষ্টির অধিগম্য নন, তবে দৃষ্টিশক্তি তাঁর অধিগত এবং তিনই সূক্ষ্মদর্শী ও সম্যক পরিজ্ঞাত” (৬ঃ ১০৩) এরুপ তুমি কি শোননি? আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “মানুষের এমন মর্যাদা নাই যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ব্যতিরেকে অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতিরেকে অথবা এমন দুত প্রেরণ ব্যতিরেকে যে তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করেন, তিনি সমুন্নত ও প্রজ্ঞাময়” (৪২ঃ ৫১)।

আয়িশা (রাঃ) বলেন, আর ঐ ব্যাক্তিও আল্লাহর উপর ভীষণ অপবাদ দেয়, যে এমন কথা বলে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কিতাবের কোন কথা গোপন রেখেছেন। কেননা আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে রাসুল! আপনার প্রতিপালকের কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার রুকন, যদি তা না করেন তবে আপনি তার বার্তা প্রচারই করলেন না। (৫ঃ ৬৭)

তিনি (আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, যে ব্যাক্তি এ কথা বলে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর ওহী ব্যতীত কাল কি হবে তা অবহিত করতে পারেন, সেও আল্লাহর উপর ভীষন অপবাদ দেয়। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “বল, আসমান ও যমীনে আল্লাহ ব্যতীত গায়েব সম্পর্কে কেউ জানে না।” (২৭ঃ ৬৫)

MuslimPoint Organization

About MuslimPoint Organization

MuslimPoint একটি অনলাইন ভিত্তিক ইসলামী প্রশ্নোত্তর, গ্রন্থাগার, ব্লগিং, কুরআন, হাদিস, কুইজ এবং বিষয় ভিত্তিক রেফারেন্স প্ল্যাটফর্ম।

View all posts by MuslimPoint Organization →

One Comment on “রাসুল (সা.) গায়েব বা অদৃশ্যের খবর জানতেন না , ব্যাখ্যা ও দলিল বা রেফারেন্স সহ”

  1. মহান আল্লাহ আলেমুল গায়েব-সমস্ত গায়েব এর খবর একমাত্র তিনি ই জানেন । আল্লাহর গায়েব আর রাসুলের গায়েব এক কথা নয় । কিন্তু আপনারা রাসুল গায়েব জানেন না এই কথা প্রমান করার জন্ন এই ভাবে সইনিক এর ভুমিকা নিলেন এটা নিসন্ধেহে রাসুলের সানে বেয়াদবি । কোন রাসুল প্রেমি মানুস এই ভাবে রাসুল কে হেয় করে সত্য প্রকাস করতে পারে না । আল্লাহ নিসেদ করেছেন। আপনার পিতা ডাক পিওন হলেই তাকে ওই পিওন বলে ডাকতে পারেন না । রাসুল সা এর বেপারে আল্লাহর এই নির্দেশ আপনি খুব ভাল জানেন । আপনারা মনে করেন আপনারা সব বুঝেন আর কেও ইসলাম বুঝে না , আপনারাই সঠিক ।

    আসলে আপনারা হল আব্দুল্লা ইবনে উবাই ইবনে খুলুছ , এয়াযিদি , ইবনে তাইমিয়া , মুহাম্মাদ বিন উহাব নজদি , নাসির উদ্দিন আল্বানি নামক বিতরকিত ইব্লিস ব্রিলিয়ান্ট দের অনুসারি ।
    আপনারা সেই মুস্লিম জারা কুরান হাদিস থেকে সহি সহি কথা বলবে উত্তম উত্তম কথা বলেন কিন্তু তাদেই ইমান ই নাই । ইমান মুখে হৃদয়ে ইমান থাকলে রাসুলের সান মান খাট করে কন বিতর্ক তইরি করতে পারতেন না । বিতর্ক তইরি করারা আরও অনেক বিসয় ছিল কিন্ত ।

    ২. তারা সর্বোত্তম (অর্থাৎ খুব ভালো ভালো) কথা বলবে, কিন্ত সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ (অর্থাৎ নিত্য নতুন ফিত্না সৃষ্টি) করবে। [সূত্রঃ মুসলিম হা/২৪৬২; আবুদাঊদ হা/৪৭৬৭; আহমাদ হা/২০৪৪৬]।
    ৩. বাহ্যিক ভাবে সুন্দর কথা বলবে অর্থাৎ তাদের কথা গুলো সঠিক মনে হবে। [সূত্রঃ বুখারী হা/ ৫০৫৭]।
    ৪. মুখে ঈমানের কথা বললেও তাদের অন্তরে ঈমানের লেশমাত্র থাকবে না। [সূত্রঃ বুখারী হা/ ৩৪১৫]।
    ৫. তাদের ঈমান ও ছালাত তাদের গ্রীবাদেশ অতিক্রম করবে না। [সূত্রঃ মুসলিম হা/২৪৬২]।
    ৭. তারা হবে ইবাদতে অন্যদের চেয়ে অগ্রগামী অর্থাৎ ইবাদাতে তারা আগে আগে থাকবে, কিন্তু নিজেদের ইবাদতের জন্য হবে অহংকারী। লোকেরা তাদের ইবাদত দেখে অবাক হবে। [সূত্রঃ আহমাদ হা/১২৯৭২; ইবনু আবী আছিম, আস-সুন্নাহ হা/৯৪৫]।
    ১৭. মতভেদ ও মতানৈক্যের সময় এদের আবির্ভাব হবে। [সূত্রঃ বুখারী হা/ ৬৯৩৩]।
    ১৮. মক্কা থেকে পূর্বের কোন এলাকা থেকে দলটির আবির্ভাব হবে। [সূত্রঃ সহীহ আল বুখারী, হা/ ৭১২৩]।
    ১৯. যেসব আয়াত কাফেরের জন্য প্রযোজ্য তারা সেগুলিকে মুমিনদের উপর প্রয়োগ করবে।
    [সূত্রঃ আবুদাঊদ হা/৪৭৬৯]।
    ২০. তাদের আগমন ঘটবে শেষ যামানায়। [সূত্রঃ বুখারী হা/৩৪১৫[।
    ২১. তারাও কুরআন ও সুন্নাহ দিয়েই কথা বলবে কিন্তু অপব্যাখ্যা করবে। [সূত্রঃ বুখারী হা/ ৩৪১৫]।

    আপনারা আমাদের বেদাত ই অমুসলিম মনে করলেও আমরা আপনাদের মুস্লিম ভাই মনে করি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *