দীনকে খোসা এবং মূল হিসেবে দু’ভাগে বিভক্ত করা বৈধ নয়। দীনের সবই মূল এবং মানব জাতির জন্য উপকারী। তা মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য দান করবে। পোষাক এবং বাহ্যিক বেশ-ভুশার ক্ষেত্রেও যদি মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহর অনুসরণের নিয়ত করে, তাহলে তাতেও ছাওয়াব রয়েছে। খোসা এমন জিনিসকে বলা হয়, যা উপকারী নয় বলে ফেলে দেওয়া হয়। ইসলামের ভিতরে বর্জনীয় কোনো কিছু নেই। সবই মানুষের জন্য কল্যাণকর। যারা এ ধরণের কথার প্রচলন ঘটায়, তাদের ভালোভাবে ভেবে দেখা দরকার। যাতে করে তারা সত্যের সন্ধান পেতে পারে এবং তার অনুসরণ করতে পারে। তাদের উচিৎ ইসলামের বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া বর্জন করা। এ কথা ঠিক যে, ইসলামের মধ্যে কিছু জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, ইসলামের রুকনসমূহ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسَةٍ عَلَى أَنْ يُوَحَّدَ اللَّهُ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَصِيَامِ رَمَضَانَ وَالْحَجِّ»
“ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের ওপর। আর তা হলো (১) এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য কোনো মাবূদ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল (২) সালাত প্রতিষ্ঠা করা (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) রমাযানের সিয়াম পালন করা এবং (৫) কা‘বা ঘরের হজ পালন করা।”[1]
দীনের মধ্যে এমন জিনিসও রয়েছে, যা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ; কিন্ত তাতে খোসার মতো এমন কিছু নেই যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে না, তার সম্পূর্ণটাই উপকারী।
দাড়ি লম্বা করার ব্যাপারে কথা হলো নিঃসন্দেহে তা একটি ইবাদাত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা লম্বা করার আদেশ দিয়েছেন। তাঁর প্রতিটি আদেশ পালন করাই ইবাদাত, যার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। দাড়ি রাখা আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসহ পূর্ববর্তী সমস্ত নবীর সুন্নাত। আল্লাহ তা‘আলা হারুন আলাইহিস সালামের উক্তি বর্ণনা করে বলেন,
﴿يَبۡنَؤُمَّ لَا تَأۡخُذۡ بِلِحۡيَتِي وَلَا بِرَأۡسِيٓۖ﴾ [طه: ٩٤]
“হে আমার ভাই! আমার দাড়িতে ও মাথায় ধরে টান দিবেন না।” [সূরা ত্বাহা, আয়াত: ৯৪]নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, দাড়ি লম্বা করা স্বভাবগত বিষয়ের অন্তর্গত। সুতরাং দাড়ি লম্বা করা একটি ইবাদাত, অভ্যাস নয় এবং তা খোসাও নয়। যেমনটি ধারণা করে থাকে কতিপয় লোক।
>
[1] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল ঈমান।