আসসালামু আলাইকুম । এখানে রেজিস্ট্রেশন না করেই অংশগ্রহণ/ব্যবহার করতে পারবেন কিন্তু সর্বোচ্চ সুবিধার জন্য বিনামূল্যে রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন !
+1 vote
2.6k views
in আল-কুরআন ও তার বিভিন্ন জ্ঞান-শাস্ত্র by
হাশরের ময়দান কোথায় অনুষ্ঠিত হবে?

1 Answer

+1 vote
by (380 points)
edited by
হাশরের মাঠ কোথায় ও কেমন হবে?

হাশর আরবি শব্দ, অর্থ সমাবেশ, ভিড়, একত্র হওয়া, জড়ো হওয়া ইত্যাদি। যে মাঠে সমাবেশ ঘটবে, তাকে বলা হয় ময়দানে মাহশার বা সমাবেশের স্থল। পরকালে বিচারের জন্য কবর থেকে উত্থিত হয়ে সব প্রাণী এ মাঠে দণ্ডায়মান থাকবে। পৃথিবীই হবে হাশরের মাঠ। বিশুদ্ধ হাদীসের বর্ণনা মতে শামে হবে হাশরের মাঠ। আর তৎকালীন শাম বর্তমানে সিরিয়া, জর্দান, লেবানন, ফিলিস্তীন ও ইসরাঈলের পুরো ভূখন্ড এবং ইরাক, তুরস্ক, মিসর ও সঊদী আরবের কিছু অংশকে শামিল করে (উইকিপিডিয়া) । আবু যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘শাম হল একত্রিত হওয়ার ও পুনরুত্থিত হওয়ার স্থান’ (সহীহুল জামে-৩৭২৬) । অন্য বর্ণনায় তিনি হাশরের স্থান হিসাবে শামের দিকে ইশারা করেছেন (আহমাদ-২০০৪৩, সহীহুল জামে‘ হা/২৩০২) ।

কেমন হবে হাশরের মাঠ:
আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন,  আমি জমিনের উপরিভাগকে (বিচার দিবসে) উদ্ভিদশূন্য মাটিতে পরিণত করে দেব। (সুরা কাহাফ-৮)

হাশরের ময়দানে উত্থিত হওয়ার সময় সবাই আল্লাহর প্রশংসা করবে:
ইসরাফীল আলাইহিস সালামএ র দ্বিতীয় ফুৎকারের সময় সব মৃত জীবিত হয়ে যাবে। তারা ‘হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং প্রশংসা করছি’ বলে হাশরের ময়দানে একত্র হবে। আল্লাহ তাআলা  বলেন, ‘যেদিন তিনি তোমাদের (হাশরের মাঠে একত্র হওয়ার জন্য) আহ্বান করবেন, অতঃপর তোমরা তাঁর প্রশংসা করতে করতে চলে আসবে এবং তোমরা অনুমান করবে যে সামান্য সময়ই (দুনিয়ায়) অবস্থান করেছিলে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল-৫২)

যেভাবে মানুষ হাশরের মাথে ওঠবে:
ইসরাফীল আলাইহিস সালাম এর সর্বশেষ ফুৎকারের সঙ্গে সঙ্গে পিপীলিকার মতো ও বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের মতো সবাই উঠে দাঁড়াবে। আল্লাহ্‌ তালা বলেন, ‘অতঃপর দ্বিতীয়বার শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে, তখন সবাই দাঁড়িয়ে যাবে এবং পরস্পরের দিকে তাকাবে।’ (সুরা জুমার-৬৮)

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মানুষদের নগ্নপদে, নগ্নদেহে ও খতনাবিহীন অবস্থায় সমবেত করা হবে।’ তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! নারী-পুরুষ সবাই কি একজন অন্যজনের লজ্জাস্থান দেখতে থাকবে? তখন তিনি বলেন, ‘হে আয়েশা! সেই  সময়টি এতই ভয়ংকর হবে যে কেউ কারো প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার অবকাশ পাবে না।’ (বুখারি, মুসলিম)

কিয়ামতের দিন বহু মানুষ অন্ধ অবস্থায় ওঠবে। আল্লাহ্‌ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সে বলবে, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে কেন অন্ধ করে উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুষ্মান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এভাবেই তোমার কাছে আমার আয়াতগুলো এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাব।’ (সুরা তা-হা-১২৪-১২৬)

হাশরের ময়দানে মানুষ তিনটি অবস্থায় উত্থিত হবে। ১. একদল  বাহনে করে, ২. একদল পদব্রজে, ৩. একদল মাথায় হেঁটে। যেমন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘অবশ্যই মানুষ তিনটি দলে বিভক্ত হবে। একদল আরোহী স্বাদগ্রহণকারী ও সম্মানী। আরেকদল রয়েছে, যাদের ফেরেশতারা চেহারায় হাঁটিয়ে দোজখে নিয়ে যাবেন, আরেকদল পদব্রজে হাশরে উত্থিত হবে।’ প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! মানুষ চেহারায় কিভাবে হাঁটবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে আল্লাহ পায়ে হাঁটাতে পারেন, তিনি কি চেহারায় হাঁটাতে পারবেন না?’ (বুখারি ও মুসলিম-২৮০৬)

Related questions

...