আসসালামু আলাইকুম । এখানে রেজিস্ট্রেশন না করেই অংশগ্রহণ/ব্যবহার করতে পারবেন কিন্তু সর্বোচ্চ সুবিধার জন্য বিনামূল্যে রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন !
0 votes
192 views
in মাসআলা মাসায়েল by (1.9k points)
জোড়া জোড়া সৃষ্টির অর্থ কি? এর দ্বারা কি স্বামী-স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে নাকি অন্য কিছু?

1 Answer

0 votes
by (1.3k points)
আল্লাহ্‌ তাআলা কুরআনে বলেছেন:

"আমি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি।"

এখানে জোড়া জোড়া বলতে কি স্বামী-স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে নাকি অন্য কিছু?

আল্লাহ তাআলা কুরআনের বিভিন্ন স্থানে মানুষকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করার কথা বলেছেন।

কোথাও বলেছেন, তিনি সৃষ্টি জগতের প্রতিটি বস্তুকেই জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন।

যেমন নিম্নোক্ত আয়াতগুলো:

আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنثَىٰ

“এবং তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল-পুরুষ ও নারী।”

(সূরা নজম: ৪৫)

 আল্লাহ আরও বলেন:

وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

“তাঁর আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।

(সূরা রূম: ২১)

★তাফসীর:

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তিনি মানুষকে নারী ও পুরুষ এই দুই প্রজাতিতে সৃষ্টি করেছেন।

এখানে উদ্দেশ্য হল, নারী-পুরুষ দুই প্রজাতি।

স্বামী-স্ত্রী উদ্দেশ্য নয়।

কেননা, অনেক ছেলে বা মেয়ে অবিবাহিত অবস্থায় মারা যায়।

অনেকেই বিবাহ ছাড়াই জীবন অতিবাহিত করে দেয়।

তাহলে কোথায় তাদের স্ত্রী/স্বামী? সুতরাং নিশ্চিতভাবে বলা যায়, জোড়া দ্বারা স্বামী-স্ত্রী উদ্দেশ্য নয়। বরং নারী ও পুরুষ এ দুই প্রজাতি উদ্দেশ্য।

পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে, তিনি আমাদের সঙ্গীনীদেরকে আমদের মধ্য থেকেই সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ নারী পুরুষ উভয়কেই আল্লাহ মানুষ প্রজাতির মধ্য থেকেই সৃষ্টি করেছেন।

(তাফসীরে ইবনে কাসীর) উভয়ের সৃষ্টি উপাদান এক।

তা হল, পুরুষের বীর্য।

নারী-পুরুষ উভয়েই পুরুষের বীর্য থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।

 আল্লাহ তাআলা প্রতিটি বস্তুই জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন:

আল্লাহ তাআল বলেন:

وَمِن كُلِّ شَيْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ

“আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।" (সূরা যারিয়াত: ৪৯)

তাফসীর:

মুফাসসিরগণ বলেন, প্রতিটি বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টির অর্থ: আল্লাহ তাআলা তার সৃষ্টি জগতকে পরষ্পর বিপরীতমূখী করে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন।

◼ প্রখ্যাত তাবেঈ ও মুফসসির মুজাহিদ ( রহ.) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বিপরীতমূখী বিষয়ের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন:

ঈমান-কুফর, সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য, হেদায়াত-গোমরাহী, রাত-দিন, আসমান-জমিন, মানুষ-জিন ইত্যাদি।

◼ ইবনে কাসীর (রাঃ) বলেন,

অল্লাহর প্রতিটি সৃষ্টি জোড়া জোড়া। যেমন আসমান-জমিন, রাত- দিন, সূর্য-চন্দ্র, স্থল-জল, আলো-অন্ধকার, ঈমান-কুফর, জীবন-মৃত্যু, সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য, জান্নাত-জাহান্নাম ইত্যাদি।

এমনকি প্রাণী জগতেও জোড়াজোড়া। যেমন, জিন-ইনসান, পুরুষ-নারী, বিভিন্ন ধরণের তৃণ-লতা ইত্যাদি।

◼ জোড়া জোড়া সৃষ্টির আরও উদাহরণ:

সুস্থতা-অসুস্থতা, সাদা-কালো, ভালো-মন্দ, সমতল-অসমত, সকাল-সন্ধ্যা, ঠাণ্ডা-গরম, শুষ্ক-আদ্র, শক্ত-নরম, মিষ্টি-তিতা, চক্ষুষ্মান-অন্ধ, উঁচু-নিচু ইত্যাদি।

এসব বিপরীতমূখী জোড়া জোড়া সৃষ্টি মহান স্রষ্টা আল্লাহর অনুপম নির্দশন

----------------------------------------------------------------------------------------------------------

Related questions

...