হাউয অর্থ চৌবাচ্চা বা পানি জমা হওয়ার স্থান। আর কাওছার অর্থ প্রচুর পরিমাণ, দানবীর নেতা, অফুরন্ত নে‘মত। এখানে হাউযে কাওছার হলো, জান্নাতের একটি ঝরনা। এটি প্রশস্ত গম্মুজ ও অনেক সারাইখানাবিশিষ্ট মণি-মুক্তা দ্বারা তৈরি। আনাস ইবনু মালেক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আমি জান্নাতে ভ্রমণ করছিলাম, এমন সময় এক ঝরনার কাছে এলে দেখি যে তার দু’ধারে ফাঁপা মুক্তার গম্বুজ রয়েছে। আমি বললাম, হে জিবরীল! এটা কী? তিনি বললেন, এটা ঐ কাওছার যা আপনার প্রতিপালক আপনাকে দান করেছেন। তার ঘ্রাণে অথবা মাটিতে ছিল উত্তম মানের মিশক-এর সুগন্ধি’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬৫৮১; তিরমিযী, হা/৩৩৬০)।
হাউযে কাওছারের চতুর্দিকের আয়তন প্রায় এক মাসের পথ। যার দূরত্ব ইয়ামান দেশের আদান হতে সিরিয়ার হাওযের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের পরিমাণ। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আমার হাউযের প্রশস্ততা এক মাসের পথের সমান। তার পানি দুধের চেয়ে সাদা, তার ঘ্রাণ মিশক-এর চেয়ে বেশি সুগন্ধযুক্ত এবং তার পানপাত্রগুলো হবে আকাশের তারকার মতো অগণিত। তাত্থেকে যে পান করবে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬৫৭৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২২৯২; মিশকাত, হা/৫৫৬৭)। আবূ সাল্লাম বলেন, ছাওবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘ইয়ামান দেশের আদান হতে সিরিয়ার হাওযের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের পরিমাণ। এর পানির রং দুধের চেয়ে সাদা, মধুর চেয়ে মিষ্টি এবং পানপাত্রের সংখ্যা হবে আকাশের তারকার সমসংখ্যক। যে ব্যক্তি তা হতে এক ঢোক পানি পান করবে, সে আর কখনো পিপাসিত হবে না। সর্বপ্রথম এর পানি পানের সৌভাগ্য অর্জন করবে দরিদ্র মুহাজিরগণ, যাদের মাথার চুল উশকোখুশকো, পোশাক ধূলিমলিন, যারা ধনীর দুলালীদের বিয়ে করেননি এবং যাদের জন্য বন্ধ দরজা খোলা হতো না’ (তিরমিযী, হা/২৪৪৪; মিশকাত, হা/৫৫৯২)।