কেয়ামতের আলামত এর তালিকা , ব্যাখ্যা ও উদাহরণসহ বিস্তারিত
ইতিমধ্যে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও উদাহরণসহ কেয়ামতের আলামত পোষ্ট করা হয়েছে । সবগুলো পোষ্ট একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন ।
মহানবী (সা.) বলেন, গুপ্ত জ্ঞানের বিষয় পাঁচটি:
১. কিয়ামত। তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না।
২. আগামী দিন কী ঘটবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।
৩. কখন বৃষ্টি হবে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।
৪. কার কোথায় মৃত্যু হবে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।
৫. কখন কিয়ামত হবে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। (সহিহ বুখারি)।
————————————–
ধোঁয়া (ধূম্র)
দাজ্জাল
অদ্ভুত প্রাণী
পশ্চিম দিগন্তে প্রভাতের সূর্যোদয়
মরিয়ম আঃ এর সন্তান ঈসা আঃ এর পৃথিবীতে প্রত্যাগমন
ইয়াজুজ-মাজুজের উদ্ভব
তিনটি ভূমিধ্বস
প্রাচ্যে ভূমি ধ্বস
পাশ্চাত্যে ভূমিধ্বস
আরব উপদ্বীপে ভূমিধ্বস
পরিশেষে ইয়েমেন থেকে উত্থিত হাশরের ময়দানে দিকে তাড়নাকারী বিশাল অগ্নি।
————————————–
কেয়ামতের ছোট ছোট আলামতের মধ্যে রয়েছে-
১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত লাভ।
২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যু।
৩. বায়তুল মোকাদ্দাস বিজয়।
৪. ফিলিস্তিনের “আমওয়াস” নামক স্থানে প্লেগ রোগ দেখা দেয়া।
৫. প্রচুর ধন-সম্পদ হওয়া এবং যাকাত খাওয়ার লোক না-থাকা।
৬. নানারকম গোলযোগ (ফিতনা) সৃষ্টি হওয়া। যেমন ইসলামের শুরুর দিকে উসমান (রাঃ) এর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া, জঙ্গে জামাল ও সিফফিন এর যুদ্ধ, খারেজিদের আবির্ভাব, হাররার যুদ্ধ, কুরআন আল্লাহর একটি সৃষ্টি এই মতবাদের বহিঃপ্রকাশ ইত্যাদি।
৭. নবুয়তের মিথ্যা দাবিদারদের আত্মপ্রকাশ। যেমন- মুসাইলামাতুল কাযযাব ও আসওয়াদ আনসি।
৮. হেজাযে আগুন বের হওয়া। সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি ৬৫৪হিঃ তে এই আগুন প্রকাশিত হয়েছে। এটা ছিল মহাঅগ্নি। তৎকালীন ও তৎপরবর্তী আলেমগণ এই আগুনের বিবরণ দিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যেমন ইমাম নববী লিখেছেন- “আমাদের জামানায় ৬৫৪হিজরিতে মদিনাতে আগুন বেরিয়েছে। মদিনার পূর্ব পার্শ্বস্থ কংকরময় এলাকাতে প্রকাশিত হওয়া এই আগুন ছিল এক মহাঅগ্নি। সকল সিরিয়াবাসী ও অন্য সকল শহরের মানুষ তাওয়াতুর সংবাদের ভিত্তিতে তা অবহিত হয়েছে। মদিনাবাসীদের মধ্যে এক ব্যক্তি আমাকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, যিনি নিজে সে আগুন প্রত্যক্ষ করেছেন।”
৯. আমানতদারিতা না-থাকা। আমানতদারিতা ক্ষুণ্ণহওয়ার একটা উদাহরণ হচ্ছে- যে ব্যক্তি যে দায়িত্ব পালনের যোগ্য নয় তাকে সে দায়িত্ব প্রদান করা।
১০. ইলম উঠিয়ে নেয়া ও অজ্ঞতা বিস্তার লাভ করা। ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে আলেমদের মৃত্যু হওয়ার মাধ্যমে। সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম এরসপক্ষে হাদিস এসেছে।
১১. ব্যভিচার বেড়ে যাওয়া।
১২. সুদ ছড়িয়ে পড়া।
১৩. বাদ্য যন্ত্র ব্যাপকতা পাওয়া।
১৪. মদ্যপান বেড়ে যাওয়া।
১৫. বকরির রাখালেরা সুউচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ করা।
১৬. কৃতদাসী কর্তৃক স্বীয় মনিবকে প্রসব করা। এই মর্মে সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমেহাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। এই হাদিসের অর্থের ব্যাপারে আলেমগণের একাধিক অভিমত পাওয়া যায়। ইবনে হাজার যে অর্থটি নির্বাচন করেছেন সেটি হচ্ছে- সন্তানদের মাঝে পিতামাতার অবাধ্যতা ব্যাপকভাবে দেখা দেয়া। সন্তান তার মায়ের সাথে এমন অবমাননাকর ও অসম্মানজনক আচরণ করাযাএকজন মনিব তার দাসীর সাথে করে থাকে।
১৭. মানুষ হত্যা বেড়ে যাওয়া।
১৮. অধিকহারে ভূমিকম্প হওয়া।
১৯. মানুষের আকৃতি রূপান্তর, ভূমি ধ্বস ও আকাশ থেকে পাথর পড়া।
২০. কাপড় পরিহিতা সত্ত্বেও উলঙ্গ এমন নারীদের বহিঃপ্রকাশ ঘটা।
২১. মুমিনের স্বপ্ন সত্য হওয়া।
২২. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া বেড়ে যাওয়া; সত্য সাক্ষ্য লোপ পাওয়া।
২৩. নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া।
২৪. আরব ভূখণ্ড আগের মত তৃণভূমি ও নদনদীতে ভরে যাওয়া।
২৫. একটি স্বর্ণের পাহাড় থেকে ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীর উৎস আবিষ্কৃত হওয়া।
২৬. হিংস্র জীবজন্তু ও জড় পদার্থ মানুষের সাথে কথা বলা।
২৭. রোমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এবং মুসলমানদের সাথে তাদের যুদ্ধ হওয়া।
২৮. কনস্টান্টিনোপল বিজয় হওয়া।
পক্ষান্তরে কেয়ামতের বড় বড় আলামত হচ্ছে সেগুলো যা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুযাইফা বিন আসিদ (রাঃ) এর হাদিসে উল্লেখ করেছেন। সে হাদিসে সব মিলিয়ে ১০টি আলামত উল্লেখ করা হয়েছে: দাজ্জাল, ঈসা বিন মরিয়ম (আঃ) এর নাযিল হওয়া, ইয়াজুজ ও মাজুজ, পূর্বে পশ্চিমে ও আরব উপদ্বীপে তিনটি ভূমিধ্বস হওয়া, ধোঁয়া, সূর্যাস্তের স্থান হতে সূর্যোদয়, বিশেষ জন্তু, এমন আগুনের বহিঃপ্রকাশ যা মানুষকে হাশরের মাঠের দিকে নিয়ে যাবে। এই আলামতগুলো একটার পর একটা প্রকাশ হতে থাকবে। প্রথমটি প্রকাশিত হওয়ার অব্যবহিত পরেই পরেরটি প্রকাশ পাবে। ইমাম মুসলিম হুযাইফা বিন আসিদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে কথাবার্তা বলতে দেখে বললেন: তোমরা কি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছ? সাহাবীগণ বলল: আমরা কেয়ামত নিয়ে আলোচনা করছি। তখন তিনি বললেন: নিশ্চয় দশটি আলামত সংঘটিত হওয়ার আগে কেয়ামত হবে না। তখন তিনি ধোঁয়া, দাজ্জাল, বিশেষ জন্তু, সূর্যাস্তের স্থান হতে সূর্যোদয়, ঈসা বিন মরিয়মের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব উপদ্বীপে তিনটি ভূমি ধ্বস এবং সর্বশেষ ইয়েমেনে আগুন যা মানুষকে হাশরের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে উল্লেখ করেন। এই আলামতগুলোর ধারাবাহিকতা কী হবে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট সহিহ কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে বিভিন্ন দলিলকে একত্রে মিলিয়ে এগুলোর ধারাবাহিকতা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। শাইখ উছাইমীনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেয়ামতের বড় বড় আলামতগুলো কি ধারাবাহিকভাবে আসবে?
জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন: কেয়ামতের আলামতগুলোর মধ্যে কোন কোনটির ধারাবাহিকতা জানা গেছে; আর কোন কোনটির ধারাবাহিকতা জানা যায়নি। ধারাবাহিক আলামতগুলো হচ্ছে- ঈসা বিন মরিয়মের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজের বহিঃপ্রকাশ, দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ।
প্রথমে দাজ্জালকে পাঠানো হবে। তারপর ঈসা বিন মরিয়ম এসে দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তারপর ইয়াজুজ-মাজুজ বের হবে। সাফফারিনী (রহঃ) তাঁর রচিত আকিদার গ্রন্থে এই আলামতগুলোর ধারাবাহিকতা নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু তাঁর নির্ণয়কৃত এ ধারাবাহিকতার কোন কোন অংশের প্রতি মন সায় দিলেও সবটুকু অংশের প্রতি মন সায় দেয় না। তাই এই আলামতগুলোর ধারাবাহিকতা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- কেয়ামতের বড় বড় কিছু আলামত আছে। এগুলোর কোন একটি প্রকাশ পেলে জানা যাবে, কেয়ামত অতি সন্নিকটে। কেয়ামত হচ্ছে- অনেক বড় একটা ঘটনা। এই মহা ঘটনার নিকটবর্তিতা সম্পর্কে মানুষকে আগেভাগে সতর্ক করা প্রয়োজন বিধায় আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের জন্য বেশ কিছু আলামত সৃষ্টি করেছেন।[মাজমুউ ফাতাওয়া, খণ্ড-২, ফতোয়া নং- ১৩৭] আল্লাহই ভাল জানেন।
———————————————————
একটা হাদীসে আমাদের নবী (স) বলেছেনঃ ইরাকে এমন অবস্থা হবে যে, এখানে খাওয়ার জন্য একদিন একখানা রুটিও মেলবেনা, কিংবা কারো হাতে কোন পয়সাও পাওয়া যাবেন। (মুসলিম) এই হাদীস কে মিলাতে যেয়ে ১৯৯০ সালে ইরাকের অর্থনৈতিক অবরোধের সময় আসা দূ্র্ভিক্ষের সময়ের কথা অনেকেই বলতেন। কিন্তু ইরাকে এমন ঘটনা তাতারদের সময়েও হয়েছে। বেশ কিছু হাদীসে দুনিয়ার বয়স সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে। ৯০০ বছর বা এক হাজার বছর সংক্রান্ত কিছু হাদীস নিয়ে ইমাম সুয়ূতির মত মানুষ ও বিপদে পড়েছেন। তিনি ৯১১ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। কিয়ামতের আলামত সমূহ নিয়ে তিনি অনেক গবেষণা ও করেছেন। তিনি বুঝেছিলেন তার সময়েই ইমাম মাহদীর জন্ম হয়ে গেছে, তার কাছে নাকি ইলহাম ও হয়েছে এই ব্যাপারে। তাছাড়া তখন আমাদের নবী (সা) এর ইন্তেকালের পর ৯০০ বছর ও হয়ে গেছে। কিন্তু কই? এর পরেও কিন্তু ৫00+ বছর প্রায় হয়ে গেল পৃথিবীর বয়স।
আসরারুস সাআহ নামে ফাহাদ সালেমের একটা বই পড়ার সুযোগ হয়েছে। সেখানে তিনি ১৯৯১ সালের ঘটনা প্রবাহকে কিয়ামতের ঘটনা বলে দেখায়েছেন। অনেকেই সেই সময় সাদ্দামকে ইমাম মাহদীর জেনারেল মনে করতো। আমীন মুহাম্মাদ জামালের ‘আরমেদান’ (হারমিদূন) বই এ সাদ্দামকে ইমাম মাহদী দেখায়েছেন।
ইমাম মুসলিম মহানবী (সা) এর বানীসাক্বীফ এর কাযযাব (মিথ্যুক) ও মুবীর (ধ্বংশকারী) সংক্রান্ত ভবিষ্যতবাণীকে সাহাবী আসমা’ বিনতে আবূ বাকরের (রা) একটা ব্যাখ্যা বর্ণনা করেছেন। আসমা (রা) কাযযাব বলতে মুখতার সাক্বাফীকে বুঝিয়েছেন। আর মুবীর বলতে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কে বুঝিয়েছেন। কিন্তু হাদীস এখনো উন্মুক্ত। এই ধরণের কাযযাব ও মুবীর সাক্বীফে আরো আসতে পারে।
———————————————————
অতীতঃ
১. চাঁদের দ্বিখণ্ডিত হওয়া।
২. মুহাম্মদ(সা) এর মৃত্যু।
৩. কোন কারণে হাজার হাজার মুসলিমের মৃত্যু (উমার (রা) এর সময় আমওয়াস এর প্লেগকে ধারনা করা হয়)।
৪. মদীনায় একটি বড় যুদ্ধ (ইয়াজিদের খিলাফতের সময় ৬৩ হিজরিতে আল হাররাজের যুদ্ধকে ধারনা করা হয়)।
৫. মুসলিমদের জেরুজালেম জয়।
৬. মুসলিমদের কন্সটান্টিপল জয়।
৭. মুসলিমদের দুই পক্ষের নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ।
৮. মুসলিমদের সাথে লাল গাত্রবর্নের ছোট চোখওয়ালা, চুলের সেন্ডেল পরা জাতির যুদ্ধ (মঙ্গোলদের ইসলামিক রাজ্যে আক্রমনকে ধারনা করা হয়)।
৯. মুসলিম ও অমুসলিম হলদে গাত্রবর্নের জাতিদের মধ্যে শান্তিচুক্তি (মঙ্গল, চাইনিজ ইত্যাদি)।
১০. জন ভন্ড নবীর (দাজ্জাল) আবির্ভাব হবে (যাদের আগমন চলছে)।
বর্তমান:
১. উলঙ্গ, দুঃস্থ, খালি পায়ের মেষ পালক উঁচু দালান বানানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবে।
২. দাসী তার মালিকের জন্ম দিবে।
৩. আরবের প্রতি ঘরে একটি ফিতনাহ প্রবেশ করবে।
৪. জ্ঞানের গভীরতা নিয়ে নেয়া হবে এবং অজ্ঞতা বিস্তার লাভ করবে।
৫. মদ্যপান হালাল মনে করবে।
৬. অবৈধ যৌনাচার বিস্তার লাভ করবে।
৭. ভূমিকম্প বেড়ে যাবে।
৮. সময় অনেক দ্রুত যাবে।
৯. দুঃখ কষ্ট বেড়ে যাবে।
১০. রক্তপাত বেড়ে যাবে।
১১. কেউ কোন কবরের পাশ দিয়ে যাবার সময় ভাববে যদি সে তার পূর্বের মানুষের জায়গায় থাকত।
১২. মানুষের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে যাবে; যারা নেতৃত্বের যোগ্য না তারা নেতৃত্ব পাবে।
১৩. মানুষ নামাজের জন্য একত্রিত হবে কিন্তু কোন ইমাম পাবে না।
১৪. গান বাজনা এবং গায়িকার সংখ্যা বেড়ে যাবে।
১৫. মসজিদ নিয়ে লোকেরা গর্ব করবে।
১৬. মুসলমানেরা শিরকে লিপ্ত হবে।
১৭. ঘন ঘন বাজার হবে।
১৮. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে।
১৯. লোকেরা কালো রং দিয়ে চুল-দাড়ি রাঙ্গাবে।
২০. কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে।
২১. ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়বে।
২২. পরিচিত লোকদেরকেই সালাম দেয়া হবে।
২৩. মহিলাদের জন্য এমন পোষাক আবিস্কার হবে যা পরিধান করার পরও মহিলাদেরকে উলঙ্গ মনে হবে।
২৪. সুন্নাতী আমল সম্পর্কে গাফিলতী করবে।
২৫. নতুন মাসের চাঁদ উঠার সময় বড় হয়ে উদিত হবে।
২৬. মিথ্যা কথা বলার প্রচলন বৃদ্ধি পাবে।
২৭. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবে।
২৮. হঠাৎ মৃত্যুর বরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
ভবিষ্যৎ:
১. ভূমি ধস ও চেহারা বিকৃতির শাস্তি দেখা দিবে।
২. মু’মিনের স্বপ্ন সত্য হবে।
৩. জড় পদার্থ এবং হিংস্র পশু মানুষের সাথে কথা বলবে।
৪. কাহতান গোত্র থেকে একজন সৎ লোক বের হয়ে মুসলিমদের নেতৃত্ব দিবেন।
৫. প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, ফসল হবেনা।
৬. পুরুষের সংখ্যা কমতে থাকবে, নারীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে যতক্ষন না ১জন পুরুষের বিপ্রীতে ৫০ জন নারী হয়।
৭. ইউফ্রেতিসে সোনা আবিষ্কার হবে, সেই সোনা লাভের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ হবে আর তাতে অনেকে মারা যাবে।
৮. রোমান(ইউরোপিয়ান)রা আ’মাক বা ওয়াবিক নামক জায়গায় যাবে আর মদীনা থেকে সেরা যোদ্ধাদের সেনাবাহিনী তাদের মুখোমুখি হতে যাবে।
৯. মুসলিমরা রোম জয় করবে।
১০. ইমাম মাহদী আসবে।
১১. দাজ্জাল বা অ্যান্টিক্রিস্ট আসবে, তার ধোঁকাবাজির সকল উপাদান নিয়ে বিশাল বিজয় পাবে। ইরানের ৭০০০০ হাজার ইহুদী তার অনুসারী হবে।
১২. ঈসা(আ) দামাস্কাসে নেমে আসবেন এবং মাহদী এর পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়বেন।
১৩. ইমাম মাহদী এর নেতৃত্বে মুসলিম(যেসব ইহুদী ও খ্রিস্টান যীশু(আ) ফিরে আসার পর তার উপর সত্যিকারের বিশ্বাস আনবে তারাও এর অন্তর্ভুক্ত)ও ইহুদী ও অন্যান্য অমুসলিমদের বড় একটি যুদ্ধ হবে।
১৪. ঈসা (আ) দাজ্জালকে হত্যা করবেন লুদ এর প্রবেশ পথে বর্তমানে এটি ইসরাইলের একটি এয়ারপোর্ট ও মেজর মিলিটারি বেস।
১৫. ঈসা (আ) ক্রশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর হত্যা করবেন। মিথ্যা খ্রিস্ট ধর্মের পতন ঘটাবেন
ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব হবে।
১৬. ঈসা (আ) এর বাকী সময় অসাধারণ শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজ করবে।
১৭. সবার এতো বেশি সম্পদ হবে যে যাকাত দেবার লোক পাওয়া যাবে না।
১৮. আরব বাগান ও নদীর দেশে পরিণত হবে।
১৯. সমাজ আবার খারাপের দিকে যাওয়া শুরু করবে।
২০. যুলখুলসাহ দেবমূর্তির চারপাশে আবারো জাওস গোত্রের নারীরা নিতম্ব দুলিয়ে তাওাফ করবে।
২১. বশরার অধিবাসীরা হিজাজের ভয়ংকর আগুন দেখতে পাবে।
২২. পৃথিবীর তিনটি বড় সেনাদল পৃথিবীতে নিমজ্জিত হবে। একটি পূর্বে, একটি পশ্চিমে, একটি আরবে।
২৩. সরু পায়ের আবিসিনিয়ান (নিগ্রো) নেতা কাবা ধ্বংস করবে।
২৪. ধোঁয়ার বিশাল মেঘ আসবে।
২৫. সূর্য পশ্চিম দিকে উঠবে।
২৬. দাবাতুল আরদের আবির্ভাব হবে মুসা(আ) এর লাঠি এবং সোলায়মান(আ) এ আংটি নিয়ে, সে মানুষের সাথে কথা বলবে, এবং ঈমানদার ওকাফেরদের চিহ্নিত করবে।
২৭. একটি বাতাস এসে সকল বিশ্বাসীদের আত্মা নিয়ে যাবে।
২৮. পৃথিবীতে ‘আল্লাহ সেরা’ বা ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোন প্রভু নেই’ বলার মত কেউ থাকবে না।
২৯. সবচেয়ে খারাপ লোকদের উপর কিয়ামত আসবে।
৩০. কিয়ামতের সবচেয়ে প্রধান আলামত হিসেবে ঠিক আগের দিন ইয়েমেন থেকে একটা আগুনের আবির্ভাব হবে আর মানুষদের তাদের মিলিত হবার স্থানে একত্রিত করবে।
৩১. ইস্রাফিল(আ) এর শিঙা বাজানো যার ফলে সবাই মারা যাবে।
——————————————————-
for more details : https://www.hadithbd.com/books/section/?book=21
ছোট আলামতগুলো
১) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর আগমণ ও মৃত্যু বরণ
২) চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়া
৩) বায়তুল মাকদিস (ফিলিস্তীন) বিজয়
৪) ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে
৫) কিয়ামতের পূর্বে অনেক ফিতনার আবির্ভাব হবে
৬) ভন্ড ও মিথ্যুক নবীদের আগমণ হবে
৭) হেজায অঞ্চল থেকে বিরাট একটি আগুন বের হবে
৮) আমানতের খেয়ানত হবে
৯) দ্বীনী ইল্ম উঠে যাবে এবং মূর্খতা বিস্তার লাভ করবে
১০) অন্যায়ভাবে যুলুম-নির্যাতনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে
১১) যেনা-ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে
১২) সুদখোরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে
১৩) গান বাজনা এবং গায়িকার সংখ্যা বেড়ে যাবে
১৪) মদ্যপান হালাল মনে করবে
১৫) মসজিদ নিয়ে লোকেরা গর্ব করবে
১৬) দালান-কোঠা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে
১৭) দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে
১৯) সময় দ্রুত চলে যাবে
২০) মুসলমানেরা শির্কে লিপ্ত হবে
২১) ঘন ঘন বাজার হবে
২৩) আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে
২৪) লোকেরা কালো রং দিয়ে চুল-দাড়ি রাঙ্গাবে
২৫) কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে
২৬) ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বে
২৭) ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবে
২৮) ভূমিধস ও চেহারা বিকৃতির শাস্তি দেখা দিবে
২৯) পরিচিত লোকদেরকেই সালাম দেয়া হবে
৩০) বেপর্দা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে
৩১) মুমিনের স্বপ্ন সত্য হবে
৩২) সুন্নাতী আমল সম্পর্কে গাফিলতী করবে
৩৩) নতুন মাসের চাঁদ উঠার সময় বড় হয়ে উদিত হবে
৩৪) মিথ্যা কথা বলার প্রচলন বৃদ্ধি পাবে
৩৫) মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার প্রচলন ঘটবে
৩৬) মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে
৩৭) হঠাৎ মৃত্যুর বরণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে
৩৮) আরব উপদ্বীপ নদ-নদী এবং গাছপালায় পূর্ণ হয়ে যাবে
৩৯) প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, ফসল হবেনা
৪০) ফুরাত নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় বের হবে
৪১) জড় পদার্থ এবং হিংস্র পশু মানুষের সাথে কথা বলবে
৪২) ফিতনায় পতিত হয়ে মানুষ মৃত্যু কামনা করবে
৪৩) কাহতান গোত্র থেকে একজন সৎ লোক বের হবে
কিয়ামতের বড় আলামতঅনুচ্ছেদ ১০ টি
১. ইমাম মাহদীর আগমণ
২. দাজ্জালের আগমণ
৩. ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)এর আগমণ
৪. ইয়াজুয-মা’জুযের আগমণ
৫. তিনটি বড় ধরণের ভূমিধসঃ
৬. বিশাল একটি ধোঁয়ার আগমণ
৭. পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় হবে
৮. দাববাতুল/দাব্বাতুল আরদ্
৯. কিয়ামতের সর্বশেষ আলামত
সকল আলামত প্রকাশের পর পৃথিবীর কিছু অবস্থা
——————————————————-
১.
আবু উমামা বাহেলি (রা) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (স) বলেছেন, ইসলামের কড়াগুলো একটি একটি করে ভেঙ্গে যাবে। একটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর মানুষ তার পরেরটি আঁকড়ে ধরবে। সর্বপ্রথম যে কড়াটি ভাঙবে, সেটি হল ইসলামী শাসন। আর সর্বশেষটি হল নামাজ। [মুসনাদ আহমাদ, হাকিম, ইবনে হিব্বান]
২.
আবু হুরাইরা (রা) বলেন, রাসূলুলাহ (স) বলেছেন: “শেষ যুগে আমার উম্মাতের কিছু মানুষ তোমাদেরকে এমন সব হাদীস বলবে যা তোমরা বা তোমাদের পিতা-পিতামহগণ কখনো শুননি। খবরদার! তোমরা তাদের থেকে সাবধান থাকবে, তাদের থেকে দুরে থাকবে।” [মুসলিম/৬]
৩.
আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্নিত, রসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, মানুষের জীবনে এমন একটি যুগ আসবে, যখন তারা সুদ খাবে। তাদের যে লোক সুদ খাবে না, সুদের কিছু ধুলা তাকে গ্রাস করবে। [নাসায়ী/৪৪৫৫ (সহীহ)]
৪.
আব্দুল্লাহ(রা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ(সা) বলেন: কিয়ামত যখন কাছে চলে আসবে তখন এমন দিন আসবে যখন মূর্খতা ছড়িয়ে পরবে, জ্ঞান তুলে নেওয়া হবে এবং প্রচুর ‘হারজ’ হবে। হারজ হল হত্যা। [বুখারী/৭০৬২]
৫.
রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেন যার হাতে আমার জীবন তার শপথ, এই উম্মত ধ্বংস হবে না যতক্ষণ না তাদের পুরুষ নারীকে রাস্তায় ফেলে জনসমক্ষে ব্যাভিচারে লিপ্ত হবে। সে যুগে যে উত্তম ব্যক্তি হবে সে করে বলবে, যদি মহিলাকে এ দেয়ালের পেছনে আড়াল করে নিতে! [মুসনাদে আবি ইউলা/৬১৪১ (সহীহ)]
৬.
নবীজী (স) ইরশাদ করেন, শেষ যুগে সংঘটিত হবে ভূমিধ্বস, বর্ষিত হবে পাথরবৃষ্টি এবং মানবাকৃতিতে আসবে বিকৃতি। বলা হলো, তা কখন হবে হে আল্লাহর রাসূল! নবীজী বললেন, যখন গায়িকা বাদী, বাদ্যযন্ত্র ও মদ ব্যাপক হবে। [আলবানী, সহীহ আল জামে]
৭.
আমাকে কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে অবহিত করুন’! নবীজী বললেন,‘দাসী তার মনিবকে জন্ম দিবে এবং তুমি দেখবে নগ্নপদ, নগ্ন শরীর, অভাবী, বকরীর পালের রাখালরা প্রতিযোগিতা করবে উঁচু উঁচু বিল্ডিং নির্মাণ নিয়ে। [মুসলিম/১]
৮.
আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) বলেন, কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষণ না ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং মিথ্যাচার বেড়ে যাবে এবং বাজার হবে কাছাকাছি’। [আহমদ (সহীহ)]
৯.
নবী (স) বলেন, শেষ যুগে একদল লোকের আগমণ হবে যারা সাদা চুল-দাড়ি কালো রং দিয়ে পরিবর্তন করবে। তারা জান্নাতের গন্ধও পাবে না। [নাসায়ী/৫০৭৫ (সহীহ)]
১০.
যত দিন লোকেরা মসজিদ নিয়ে গর্ব না করবে ততদিন কিয়ামত হবেনা। [মুসনাদে আহমাদ। ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে, হাদীছ নং ৭২৯৮]
১১.
নবী (স) বলেন, কিয়ামতের পূর্বে কেবল পরিচিত লোকদেরকেই সালাম দেয়া হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বে। এমনকি স্ত্রীলোকেরা তাদের স্বামীদের ব্যবসায়িক কাজে সহযোগিতা করবে। [মুসনাদে আহমাদ, আহমাদ শাকের (রঃ) হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন]
১২.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, দুই প্রকার মানুষ জাহান্নামী হবে। আমি তাদেরকে দেখিনি। এক প্রকার ঐ সমস্ত মানুষ যাদের নিকট গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে। তারা এর দ্বারা লোকদের প্রহার করবে। প্রকার ঐ সমস্ত মহিলা, যারা বস্ত্র পরিহিতা কিন্তু উলঙ্গ, বিচ্যুতকারিনা ও স্বয়ংবিচ্যুত। যাদের মাথার খোপা বুখতী উটের পিঠের উচুকুজোর ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং জান্নাতের সূঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের সূঘ্রাণ এতো-এতো দূরত্বে পাওয়া যাবে। [মুসলিম/২১২৮]
১৩.
আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (স) ইরশাদ করেন, এমন এক সময় উপস্থিত হবে যখন লোকেরা পরোয়া করবে না সম্পদ হালাল নাকি হারাম উপায়ে অর্জিত। [নাসায়ী/৪৪৫৪ (সহীহ)]
১৪.
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার ইবনে আস (র) হতে বর্নিত তিনি বলেন আমি রসুলুল্লাহ (স) কে বলতে শুনেছি, “নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের কাছ থেকে এক টানে ইলম উঠিয়ে নিবেন না, বরং আলেমদের উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমেই ইলম উঠিয়ে নিবেন। অবশেষে যখন তিনি কোন আলেমই অবশিষ্ট রাখবেন না তখন লোকেরা অজ্ঞ জাহেলদের ইমাম হিসেবে গ্রহণ করবে। অতঃপর জিজ্ঞাসিত হলে না জেনেই ফাতোয়া দেবে। তারা নিজেও গোমরাহ হবে অন্যকেও গোমরাহ করবে। [বুখারী/১০০]
১৫.
নিশ্চয়ই কিয়ামতের পূর্বে অন্ধকার রাত্রির মত ঘন কালো অনেক ফিতনার আবির্ভাব হবে। সকালে একজন লোক মুমিন অবস্থায় ঘুম থেকে জাগ্রত হবে। বিকালে সে কাফেরে পরিণত হবে। বহু সংখ্যক লোক ফিতনায় পড়ে দুনিয়ার সামান্য লাভের বিনিময়ে তাদের দ্বীন বিক্রি করে দিবে। [মুসলিম/ কিতাবুল ফিতান]
১৬.
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা) হতে বর্নিত, এমন এক যমানা আসবে মানুষ মসজিদে জমায়েত হয়ে সালাত পড়বে কিন্তু সেখানে একজনও মুমিন থাকবে না। [আবি শায়বা/১০১ (সহীহ)]