ভাইজান প্রথমে আপনি বলেছেন যে,
"সিগারেট খেলে বিবেক এর কোনো ক্ষতিসাধন হয় না। আমি নিজেই এর সাক্ষী।এটা সম্পুর্ণ আপনার নিজের উপর যদিও অনেক ড্রাগ আছে যেগুলো highly effect করে থাকে।"
আপনার এই মন্তব্য এর জবাব,
প্রথম জবাবঃ
ভাই আপনাকে একটি হাদিস মনে করিয়ে দিই, রাসূল (ছাঃ) আরোও বলেছেন, ‘যার বেশী খেলে বিবেকের ক্ষতি হয় তার অল্পও হারাম (তিরমিযী, হা/১৮৬৫; আবুদাঊদ, হা/৩৬৮১; ইবনু মাজাহ, হা/৩৩৯৩; মিশকাত, হা/৩৬৪৫)।
এখন দেখি আপনি আপনার কথার উপর টিকে থাকতে পারেন কি না !
আপনি বলেছনে যে "সিগারেট খেলে আপনার বিবেক এর কোনো ক্ষতিসাধন হয় না" , এটার কারণ হলো আপনি অনেক কম পরিমানে গ্রহণ করেন যেমন দিনে হয়তো ৫-৬ টা । এজন্য আপনি ইফেক্ট টা হয়তো বুঝতে পারেন না। কিন্তু আপনি যদি একেবারে ৫০-১০০ টা সিগারেট গ্রহণ করেন তখন বুঝবেন আপনার বিবেকের ক্ষতি হচ্ছে কি না। আর যেটা "বেশী খেলে বিবেকের ক্ষতি হয় তার অল্পও হারাম" । এজন্য সিগারেট হারাম । সেটা আপনি যদি সামান্য পরিমানেও গ্রহণ করেন তবুও হারাম হবে কারণ এটা অনেক বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে বিবেকের ক্ষতি হয়।
দ্বিতীয় জবাবঃ
যেহুতু অল্প সিগারেট গ্রহণ করলে বিবেকের কোন ক্ষতি হয় না তাই আপনি এটাকে হালাল, জায়েজ বা মাকরুহ বলতে চাচ্ছেন। আপনার কাছে প্রশ্ন, মদ, ইয়াবা বা ফেন্সিডেল ইত্যাদি ও তো অনেক অল্প পরিমানে গ্রহণ করলে বিবেকের কোন ক্ষতি হয় না , তাহলে আপনি কি এগুলোও খাওয়া জায়েজ বা হালাল বলবেন? আস্তাগফিরুল্লাহ।
তৃতীয় জবাবঃ
বর্তমানে বিজ্ঞান দিয়ে প্রমাণিত যে, সিগারেট গ্রহণ করলে মানব দেহের অনেক ক্ষতিসাধন হয়। পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ এই কারণে মৃত্যবরণ করেন। বিস্তারিত জানতে ইন্টারনেটে সার্চ দিন।
আর আল্লাহ বলেন,
'তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করবে না। ' (সুরা বাকারা, আয়াত ১৯৫)। ইসলামের এটিও একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য যে মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার প্রতি লক্ষ করে খাওয়াদাওয়ার জিনিসকে হালাল অথবা হারামে বিভক্ত করে দিয়েছে।
এখনো কি আপনি সিগারেট গ্রহণ কে জায়েজ বা মাকরুহ বলতে চাচ্ছেন?
চতুর্থ জবাবঃ
শরীয়তের বিধানের সকল কিছুর স্পষ্ট দলীল নেই। আর না থাকলে কোন জিনিস যে হালাল, তা নয়। শরীয়তের স্পষ্ট উক্তিসমুহ থেকে ফকীহগন এমন কিছু নীতি নির্ণয় করেন, যার দ্বারা বলা যায় কোনটা হালাল, আর কোনটা হারাম। যে সকল নীতির মাধ্যমে বিড়ি-সিগারেটকে হারাম করা হয়, তার কিছু নিম্নরুপঃ-
(ক) এতে রয়েছে অনর্থক অর্থ অপচয়। আর ইসলামে অপচয় হারাম।
(খ) এতে রয়েছে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি। আর যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, ইসলামে তা হারাম।
(গ) বেশি পরিমাণ পান করলে, তাতে জ্ঞানশূন্যতা আসতে পারে। আর যাতে নেশা, মাদকতা ও জ্ঞানশূন্যতা আসে, ইসলামে তা হারাম।
(ঘ) এতে দুর্গন্ধ আছে। এর দুর্গন্ধে অধূমপায়ীরা কষ্ট পায়। সুতরাং তা পবিত্র জিনিস নয়। আর ইসলাম পবিত্র জিনিস খাওয়াকে হালাল এবং অপবিত্র জিনিস খাওয়াকে হারাম ঘোষণা করেছে।